আর কয়েকদিন পরেই রথযাত্রা। তার আগে মাহেশের ঐতিহাসিক জগন্নাথ মন্দিরে বসানো হল পবিত্র নীল চক্র। পুরী থেকে এই নীল চক্র নিয়ে আসা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে বিশেষ পুজো ও হোম যজ্ঞের মধ্যে দিয়ে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম জগন্নাথদেবের মন্দিরের মাথায় নীল চক্র বসানো হয়। সেই দৃশ্য দেখতে সারাদিনই মন্দির চত্বরে ভিড় জমিয়েছিলেন ভক্তরা। কথিত আছে, এই নীল চক্র মানসিক শান্তির প্রতীক। যদি কোনও ভক্ত এই নীল চক্রের দিকে তাকিয়ে একমনে প্রার্থনা করেন, তাঁর মানসিক শান্তি আসবেই।
শুক্রবার সকাল থেকেই মন্দির চত্বরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। সকাল থেকেই মন্দিরে শুরু হয় বিশেষ পুজো ও হোম যজ্ঞ। পুরোহিত ও পণ্ডিতদের উপস্থিতিতে ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয় মাঙ্গলিক ক্রিয়াকর্ম। দুপুরে ভক্তদের মধ্যে প্রভু জগন্নাথের ভোগ বিতরণ করা হয়। বিকেল ৪টে ২৬ মিনিটে ভক্তদের জয়ধ্বনি ও উল্লাসের মধ্যে দিয়ে মন্দিরের চূড়ায় বসানো হয় নীল চক্র। অষ্টধাতু দিয়ে তৈরি এই বিশালাকার চক্রটির ওজন ৮৩ কেজি, উচ্চতা ৮.৩ ফুট ও পরিধি ৫.৫ ফুট।
মাহেশে জগন্নাথদেব ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী বলেন, ‘১৫ দিন আগে পবিত্র অষ্টধাতুর তৈরি এই নীল চক্রটি মাহেশে আনা হয়েছে পুরীধাম থেকে। আমি নিজে পুরীতে গিয়ে এটি নিয়ে আসি। ভক্তদের বিশ্বাস, এই চক্রের ঐশ্বরিক ক্ষমতা রয়েছে। এই পবিত্র চক্রটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় প্রতীক নয়, এটি মন্দিরের নিরাপত্তা ও ভক্তদের মানসিক শান্তিরও প্রতীক। এই চক্রের দিকে তাকিয়ে মন থেকে প্রার্থনা করলে মানসিক প্রশান্তি মেলে। দূর থেকে এই চক্র দেখলেই মিলবে জগন্নাথদেব দর্শনের পুণ্য।’
প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় মাহেশের মন্দিরের চূড়ায় স্থাপন করা হয় নীল চক্র। কথিত রয়েছে, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের চূড়ার আশপাশ দিয়ে কোনও বিমান বা পাখি যাতায়াত করতে পারে না। প্রভু জগন্নাথের আশীর্বাদে নীল চক্র মন্দিরের নিরাপত্তা প্রদান করে। পিয়াল অধিকারী বলেন, ‘পুরীর মতোই মাহেশেও এই নীল চক্র আশীর্বাদের রক্ষাকবচ হয়ে থাকবে।’