চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থেকে WBCS অফিসার! স্বপ্নের উড়ান প্রত্যন্ত বেলপাহাড়ির যুবকের
প্রতিদিন | ০৮ জুন ২০২৫
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: এ এক স্বপ্নের উড়ান কাহিনী! স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থেকে সোজা রাজ্যের আমলা পদে চাকরি। এমনই স্বপ্নপূরণের গল্পে এখন মশগুল ঝাড়গ্রামে বেলপাহাড়ির প্রত্যন্ত এলাকা। এখানকারই আদিবাসী যুবক ডব্লুবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) পদে চাকরি পেলেন। বেলপাহাড়ি গাড়পাহাড় এলাকার বাসিন্দা বছর বত্রিশের কবীন্দ্র হাঁসদা এমন অসাধ্য সাধন করে দেখালেন। এই ব্লকের ওদলচুয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী এহেন সাফল্যে খুশি পরিবার থেকে শুরু সহকর্মী, আত্মীয় ? সকলেই।
গাড়পাহাড় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা কবীন্দ্রর। ২০০৮ সালে বেলপাহাড়ি এসসি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০১০ সালে শিলদা রাধাচরণ ইনস্টিটিউশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০১৬ সালে কলকাতা নিউ আলিপুর কলেজে ইংরেজি অনার্স নিয়ে স্নাতক হন । পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্ক্রিনিং পরীক্ষায় সুযোগ পান কবীন্দ্র। সেখানে থাকা-খাওয়া ও বিনামূল্যে বেসরকারি কোচিংয়ে ব্যবস্থা ছিল।
এক বছর কোচিং নেওয়ার পর ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য দফতরে গ্রুপ-ডি পদে চাকরিতে যোগ দেন। চাকরি করার পাশাপাশি বাড়িতে থেকে নিজেই প্রস্তুতি চালিয়ে গিয়েছেন। ২০২২ সালে ডব্লুবিসিএস পরীক্ষা দেন কবীন্দ্র। সেই পরীক্ষার ফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ডব্লুবিসিএস এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি পান তিনি। এহেন সাফল্যের পর কবীন্দ্র সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘গ্রামে দরিদ্র মানুষজন থাকেন। যার ফলে তাঁদের ছেলে মেয়েরা শিক্ষার আলোয় আসে না। আমি চাই তাঁদেরকে শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসতে। শিক্ষা দেওয়া হলেই বাকি কাজ ওরা নিজেরা করতে পারবে।’’ ঝাড়গ্রামে এখন খুশির উৎসব। গাঁয়ের ছেলের এত বড় সাফল্য যে স্বপ্নের মতোই।