গত চার মাসে শতাধিক নাবালিকার বিয়ে রুখেছে মালদহ জেলা প্রশাসন
বর্তমান | ০৮ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: গত চার মাসে শতাধিক নাবালিকার বিয়ে রুখে দিয়েছে মালদহ জেলা প্রশাসন। তারা অধিকাংশই কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের সহযোগিতায় এই অপারেশন চালিয়েছে। এজন্য প্রশাসন প্রত্যেকটি ব্লকে কন্যাশ্রী ক্লাব এবং কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের আরও সক্রিয় করার পরিকল্পনা নিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্কুলে স্কুলে নাচ গান ও নাটকের মধ্যদিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচিও নেওয়া হচ্ছে।
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, নাবালিকা বিয়ের খবর জানাতে পারলেই ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রিভেনশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্টে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশকিছু এফআইআর করা হয়েছে।
মালদহ জেলায় নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা দীর্ঘদিনের। মাঝে কিছুটা সময় এই প্রবণতা খানিকটা থিতু হলেও ইদানীং আবার তা মাথাচাড়া দিয়েছে। এই অবস্থায় কন্যাশ্রী ক্লাবের মাধ্যমে বেশকিছু বিয়ে আটকানো গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোথাও নাবালিকার বিয়ে ঠিক হওয়ার খবর বান্ধবীরা স্কুলে পৌঁছে দিয়েছে। তখন ব্লক প্রশাসনের সহযোগিতায় নাবালিকা বিয়ে রোখা হয়েছে। আবার কেউ কেউ হয়ত বিয়ে ঠিক হতেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল। যা নজরে আসতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে নাবালিকার বাড়ি গিয়ে বিয়ে রুখেছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এবছর জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত জেলা প্রশাসন, চাইল্ড লাইন, কন্যাশ্রী ক্লাব, পুলিস এবং আরও অন্যান্য মাধ্যমে নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে বলে মোট ১৬০টি ফোন পাওয়া যায়। যার সত্যতা যাচাই করে জানা গিয়েছে ৩৬টি ভুয়ো ছিল। তবে ১২৪টি অভিযোগের সত্যতা থাকায় নাবালিকা বিয়ে রুখতে তড়িঘড়ি মাঠে নামে প্রশাসন।
কোথাও বিয়ের দিন আবার কখনও বিয়ের আগেই নাবালিকার বাড়িতে পুলিস নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন সিডিপিওরা। নাবালিকার অভিভাবকদের কখনও বুঝিয়ে আবার কখনও প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেব না, এই বয়ানে মুচলেকা নিয়ে নাবালিকা বিয়ে আটকানো হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে মালদহ জেলায় ১০০ জন নাবালিকার বিয়ে আটকাতে সফল হয়েছে প্রশাসন।
প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, এমনও হয়েছে পরিবারকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা কর্ণপাত করেনি। সেই ক্ষেত্রে এমন অনেক নাবালিকাকেই বিয়ের মণ্ডপ থেকে উদ্ধার করে এনেছে প্রাশাসন ও পুলিস। এক্ষেত্রে আইন মেনে বিয়ের মণ্ডপ থেকে উদ্ধার হওয়া নাবালিকাকে সিডব্লিউসিসি হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালদহ জেলা সমাজ কল্যাণ বিভাগ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এমন নাবালিকার সংখ্যা ৬৫।