ভুয়ো নথিতে ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়ে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি মহিলা
বর্তমান | ০৮ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, দিনহাটা: বাংলাদেশে পালানোর ছক বানচাল। ভারতীয় পাসপোর্টে সীমান্ত পেরোতে গিয়ে চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ধরা পড়ল এক বাংলাদেশি তরুণী। নাম পারভিন হোসনে আরা। তার পিতার নাম হাবিবুর রহমান। বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার গাগলা অঞ্চলের মণ্ডলতারি গ্রামের বাসিন্দা সে। শুক্রবার ওই মহিলাকে সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী ও ইমিগ্রেশনের আধিকারিকরা আটক করেন। পরে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, পারভিন হোসনে আরা ২০১৯ সালে বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। তবে সে আর দেশে ফিরে যায়নি। দীর্ঘদিন ধরে কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার অন্তর্গত সেউটি পার্ট-২ গ্রামে বসবাস করছিল বলে তদন্তে পুলিস জানিয়েছে। দিনহাটা আদালতের এক আইনজীবীর সঙ্গে বিয়েও করে। পুলিসের অনুমান, ভারতে বসবাসের বৈধতা দেখাতে মহিলা ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করেছিল। পরবর্তীতে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করে।
পুলিস সূত্রে খবর, শুক্রবার বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সে চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে যায়। তবে ইমিগ্রেশন চেকিংয়ের সময় তার অতীত রেকর্ডের সঙ্গে বর্তমান পাসপোর্টের বিবরণ মেলেনি। পরে গভীর যাচাইয়ে উঠে আসে, পারভিন হোসনে আরা আগে বাংলাদেশি পাসপোর্টে ভারতে প্রবেশ করেছিল। এরপর তাকে আটক করা হয়।
ঘটনার পর অভিযুক্ত পারভিন হোসনে আরাকে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মেখলিগঞ্জ থানায় ফরেনার্স অ্যাক্ট এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। শনিবার তাকে মেখলিগঞ্জের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন। মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিস সুপার সন্দীপ গড়াই বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে।
পুলিসের অনুমান, এই ঘটনার সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি বা দালাল জড়িত থাকতে পারে। পাসপোর্ট এবং পরিচয়পত্র তৈরির জন্য কোনও দালাল চক্রের সাহায্য নেওয়া হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তকে কেন্দ্র করে এভাবে বিদেশি নাগরিকদের অবৈধ প্রবেশ ও প্রস্থান রোধে আরও কড়া নজরদারি শুরু করেছে পুলিস ও কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
এদিকে, এই ঘটনা সামনে আসতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। একজন বিদেশি নাগরিক কীভাবে দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করতে পারলেন, কীভাবে ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করলেন এবং সেই ভিত্তিতে ভারতীয় পাসপোর্টও পেয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রশাসনিক মহলেও।