• ডেঙ্গুর মোকাবিলায় বর্ষা আসার আগে নজিরবিহীন প্রস্তুতি নবদ্বীপ পুরসভার
    বর্তমান | ০৮ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: ডেঙ্গুর চোখরাঙানি রুখতে নজিরবিহীন প্রস্তুতি নিল নবদ্বীপ পুরসভা। গত দু’বছর ঠিক এভাবেই পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে আটঘাট বেঁধে ডেঙ্গুর বেয়াড়াপনা ঠেকানো সম্ভব হয়েছিল। ফলে জেলাজুড়ে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য খবরের শিরোনামে এলেও সেখানে নবদ্বীপের নাম সামনের দিকে আসেনি। এবারও বর্ষা আসার আগে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমেছে পুরসভা। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, আগাম প্রস্তুতি ঠিকমতো নিলে ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করা যে সম্ভব, তা আমাদের পুরকর্মীরা প্রমাণ করে দিয়েছেন। গত বছর নবদ্বীপে মাত্র ২০ জনেরও কম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বছর এখনও পর্যন্ত একজনের খোঁজ মিলেছে। 

    গত একমাস ধরে পালস মোড অ্যাক্টিভিটির মধ্য দিয়ে নবদ্বীপ শহরে জমে থাকা ড্রেনের জল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ হয়েছে। গত ২৬ মে থেকে ২০ জুন পর্যন্ত প্রতিটি ওয়ার্ডে নিবিড় পরিচর্যার কাজ চলছে। সব স্তরের কর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজও শেষ হয়েছে। আগামী ৯ জুন সোমবার থেকে বাড়ি বাড়ি সার্ভের কাজে শুরু হবে। ডেঙ্গু আক্রান্তের খোঁজ পেলেই তড়িঘড়ি পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু হবে। এছাড়া ছোট ছোট জায়গায় কোনওরকম মশা জন্মাবার সম্ভাবনা থাকলে তা বিনষ্ট করা হবে। মঙ্গলবার থেকে সব পর্যায়ে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হবে। কোথাও জল জমে আছে কি না, কোথাও জঙ্গল হয়ে আছে কি না, তার খোঁজ নিচ্ছেন পুরকর্মীরা। প্রয়োজনে লার্ভা নিধনে ওষুধ স্প্রে করা হবে। নবদ্বীপ পুরসভার উদয়ন মাঠের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুক্রবার ও রবিবার বাদে সবদিনই বিনা পয়সায় রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নবদ্বীপ পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের নোডাল অফিসার তাপস খাঁ বলেন, নবদ্বীপ পুরসভা ২৪টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করবেন ২২৪ জন। এঁরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করবে জ্বরের রোগী আছেন কি না, তা দেখবেন। ৯ জুন সোমবার থেকে শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং জমা জলে লার্ভাসাইড স্প্রে করার জন্য রয়েছেন ১৪৭ জন ভিসিটি কর্মী। এঁদের উপরে রয়েছেন ৪৮ জন সুপারভাইজার। তাঁদের কাজ দেখার জন্য রয়েছেন ৮ জন ভেক্টর কন্ট্রোল মনিটরিং অফিসার। তাদের উপরে মিউনিসিপাল কোর টিম আছেন ৪ জন। তাঁদের উপর রয়েছেন মিউনিসিপ্যাল অথরিটি।

    পুরসভার স্যানিটরি ইনসপেক্টর কৃষ্ণেন্দু পাল বলেন, বর্ষা শুরুর আগে পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের তত্ত্বাবধানে বিপজ্জনক কিছু জায়গা, যেমন বদ্ধ ড্রেন, অব্যবহৃত জলাশয়, দু’টি বাড়ির মধ্যবর্তী অব্যবহৃত ফাঁকা জায়গাগুলি চিহ্নিত করেছি। তারপর একটি মাইক্রো প্ল্যানের মাধ্যমে সেই জায়গাগুলি পরিষ্কার করার কাজে নেমেছি। ২৪টি ওয়ার্ডে এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রতিদিন প্রায় ২০০ নির্মল বন্ধু কাজ করে চলেছেন।

    ৯ জুন থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্পেশাল ড্রাইভ শুরু হবে। ডেঙ্গুর বিষয়ে পুরসভার কর্মচারীদের ওয়ার্কশপ করে বলে দেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারে কোনও গাফিলতি চলবে না। যখন তখন অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে ওইসব কর্মচারীদের গতিবিধি নজরদারি চালানো হবে। উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত এক মাস আগে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেই সময় তিনি আক্রান্ত হন।
  • Link to this news (বর্তমান)