নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: শাবল দিয়ে আঘাত করে নৃশংসভাবে পিসিকে খুন করেও চাপড়ার দৈয়েরবাজার রজত দাসের কোনও অনুশোচনা নেই। পুলিস হেফাজতে থাকা রজত জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঠান্ডামাথায় সমস্ত উত্তর দিচ্ছে সে। এক পুলিস অফিসার জানান, রজত কোনও প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিচ্ছে না। তার আগে সেই উত্তরের পটভূমিকা তৈরি করছে। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাখা দিচ্ছে সে। এলাকায় ‘সমাজসেবী’ হিসেবেই পরিচিত রজতের হাবভাব দেখে তাজ্জব তদন্তকারী অফিসাররাও। নিয়ম করে রক্তদান করা, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পাশে দাঁড়ানো, জলঙ্গি নদী বাঁচানোর আন্দোলনের সামনের সারির মুখ ছিল। সারা বছর নানা সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকে রজত। ‘ভালো ছেলে’ বলেই সবাই জানত তাকে। কিন্তু, সেই নিখুঁত পরিকল্পনা করে জমি হাতানোর জন্য পিসি মনজুলা দাসকে(৫৫) খুন করে বলে অভিযোগ। কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার এক আধিকারিক বলেন, খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। সেইমতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে খুনের পরেও অভিযুক্তর অনুশোচনা নেই। জমি সংক্রান্ত বিবাদের কারণেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রজত অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঘটনাস্থল সাজিয়ে রাখে, যাতে তার উপর কোনওভাবে সন্দেহ না হয়। তার উদ্দেশ্য ছিল খুনের ঘটনাটিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা, যাতে মনে হয় রাতের অন্ধকারে একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ঘরে ঢুকে মনজুলাদেবীকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, রজত শাবল দিয়ে কুপিয়ে মনজুলা দেবীকে খুন করার পর তাঁর দেহ অর্ধনগ্ন অবস্থায় রেখে দেয়। এছাড়াও বাড়ির কিছুটা দূরে দুটি মদের বোতল রেখে দেয়। আরও কিছুটা দূরে একটি টর্চলাইট ফেলে রাখে। তবে, ময়নাতদন্তে মনজুলাদেবীকে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পুলিস জানিয়েছে, মৃত মহিলার ঘরের ভিতরে ব্যাঙ্কের নথিপত্র এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে থাকলেও আলমারিতে খোঁজাখুঁজির কোনও চিহ্ন ছিল না।