এই সময়, বর্ধমান: সাধারণ মানুষের মধ্যে স্মার্ট মিটার নিয়ে বিভ্রান্তির অন্ত নেই। বিদ্যুৎ দপ্তরের বক্তব্য, স্মার্ট মিটার লাগালে লাভবান হবেন গ্রাহকরা। দৈনন্দিন বিদ্যুৎ খরচের হিসাব পাবেন তাঁরা। নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন।
ও দিকে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবি, স্মার্ট মিটার বসানো হলে ক্ষতিই বেশি। অনেক বেশি টাকার বিল আসবে। সঙ্গে টাকা শেষ হয়ে গেলে যে কোনও সময়ে বিদ্যুৎ চলে যাবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশেই রাজ্যে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেক্ট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড বা ডব্লুবিএসইডিসিএল এই স্মার্ট মিটার বসাচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী, এই রিভ্যাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কিম বা আরডিএসএস-এর মাধ্যমে প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার বসানো বর্তমান গ্রাহকদের বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও এই স্মার্ট মিটার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ডব্লুবিএসইডিসিএল-এর বর্ধমানের রিজিয়োনাল ম্যানেজার গৌতম দত্তের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রের নির্দেশিকায় আরডিএসএস-এর মাধ্যমে প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার বসানো বর্তমান গ্রাহকদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এতে তাঁরা বিদ্যুতের বিলের ৩ শতাংশ ছাড় পাবেন। পাশাপাশি স্মার্ট মিটার বসানোর জন্য এক টাকাও খরচ করতে হবে না। এই মিটারে বিদ্যুতের বিলের ঠিক হিসাব পাওয়ার সঙ্গে কত বিদ্যুৎ এক দিনে ব্যবহার করা হয়েছে, তা গ্রাহক জানতে পারবেন নিজের মোবাইল থেকে। মিটার রিডিং নেওয়ার ক্ষেত্রেও ত্রুটি থাকবে না।’
কিন্তু রাতে বা ছুটির দিনে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তার সমাধান কী? গৌতম বলছেন, ‘রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে বলে যে প্রচার চলছে, তা মেটোও ঠিক নয়। রিচার্জ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ৩০০ টাকা পর্যন্ত বকেয়া বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহক। তার পরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে।
বকেয়া ৩০০ টাকা পার হয়ে গেলেও শনিবার, রবিবার বা কোনও ছুটির দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না। বিকেল ৫টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনও লাইন কাটা হবে না। শুধুমাত্র অফিস টাইমে লাইন কাটা হবে।’
তিনি আরও জানাচ্ছেন, যে মুহূর্তে গ্রাহক বুঝতে পারবেন যে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, তখনই বকেয়া মিটিয়ে দিলে বিদ্যুৎ ফিরে আসবে।’
তবে রাজনৈতিক দলগুলি সেই আশ্বাসে ভরসা রাখছে না। কংগ্রেসের যুব নেতা গৌরব সমাদ্দারের এ বিষয়ে বক্তব্য, ‘স্মার্ট মিটার লাগানোর পরে সাধারণ মানুষের বিলের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। বর্ধমানের বাদামতলা এলাকার একটি ছোট দোকানে প্রায় দেড় লাখ টাকা বিল এসেছে স্মার্ট মিটার লাগানোর পরে।’
তা নিয়ে রিজিয়োনাল ম্যানেজারের মন্তব্য, ‘বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। আসলে পুরোনো মিটারের ফাইনাল মিটার রিডিং নেমাবার সময়ে ভুল করে কিলো ওয়াটের পরিবর্তে কিলোভোল্ট অ্যাম্পিয়ার আওয়ারস (কেভিএএইচ) করে দিয়েছে। এটা সংশোধন করা হবে।’