অনুপ কুমার দাস: নবদ্বীপ শ্মশানের বৈষ্ণব সমাধিস্থল থেকে মরদেহর কঙ্কাল লোপাট হয়ে যাচ্ছে, ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে নবদ্বীপে তীব্র চাঞ্চল্য। প্রাচীন চৈতন্যভূমির মহাশ্মশানে রাতের অন্ধকারে সমাধিস্থ মৃতদেহ মাটি খুঁড়ে ‘লোপাট’ করার অভিযোগ উঠতেই ছুটে আসে পুলিস। রাজনৈতিক চাপানউতোরে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা নবদ্বীপ শহর। বিষয়টি সামনে আসে শুক্রবার রাতে।
কোতোয়ালি থানার আমঘাটা এলাকা থেকে এক বৈষ্ণব ভক্তের দেহ সমাধিস্থ করতে নবদ্বীপ মহাশ্মশানে এসেছিলেন শ্মশানযাত্রীরা। সমাধিস্থ করার সময় চোখে পড়ে দুটি বড় গর্ত। সন্দেহ হয় বিষয়টি শ্মশান কর্মীদের জানানো হলে, তাঁরা রাতেই খবর দেন নবদ্বীপ থানায়। পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই সামনে আসে গা শিউরে ওঠার মতো ছবি।
এক যুবক মোবাইলে সেই দৃশ্য লাইভ করেন— এবং সেই ভিডিয়োই রাতারাতি ভাইরাল। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই শ্মশানে এই রকম ঘটনা ঘটছে।
বিজেপি দলের নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য আনন্দ দাসের অভিযোগ, 'সনাতন ধর্ম মতে দীক্ষিত বৈষ্ণবদের দেহ ও অনেক শিশুর দেহ এখানে সমাধিস্থ করা হয়। অথচ দিনের পর দিন রাতের অন্ধকারে কারা যেন সেই দেহগুলি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। পুরসভার মদতেই এই দেহ পাচার হচ্ছে। পুরসভা কোনওভাবেই এই দায় এড়াতে পারে না।'
আরও অভিযোগ, 'এটি শুধু একটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, আমাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করব।' বিজেপির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমান কৃষ্ণ সাহা। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, বিজেপির কাছে এখন কোনও ইস্যু নেই। তাই মনগড়া অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে। নবদ্বীপ পুরসভার আবেদনের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার শ্মশানে পাঁচিল দেওয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে, সেই কাজ শুরু হয়েছে। কাজ চলাকালীন কিছু হাড়গোড় বাইরে বেরিয়ে আসতেই পারে। তাই নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করছে বিজেপি।
এই বিতর্কে বিভক্ত নবদ্বীপের জনমানুষও। কারও মতে ধর্মীয় আবেগে আঘাত অমার্জনীয়, কারও মতে ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই না করেই রাজনীতি করা অনুচিত। পুলিস জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভিডিয়ো-সহ সমস্ত প্রমাণ জোগাড় করে তদন্ত শুরু হয়েছে।