সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: ঋণ প্রতারণার ফাঁদে এক দম্পতি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা ট্রানজাকশন! বাড়িতে নোটিস এসে পৌঁছলে চরম আতঙ্কে পরিবার। দিন আনা দিন খাওয়া সংসারের সদস্যরা এখন কী করবেন! তা নিয়েই উড়েছে এখন রাতের ঘুম।
নদিয়ার শান্তিপুর থানার সূত্রাগর মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মঙ্গলা সাঁতরা। তিনি অস্থায়ী কর্মী হিসেবে বিদ্যুৎ দপ্তরে কাজ করতেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই মুহূর্তে কোনও কাজকর্ম করতে পারেন না। তাঁর স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালান। প্রায় ছয়-সাত মাস আগে শান্তিপুর থানা এলাকার বাসিন্দা প্রজিত ভদ্রের সঙ্গে ওই প্রৌঢ় দম্পতির পরিচয় হয়েছিল। সাঁতরা পরিবারে আর্থিক অনটন চলতে থাকায় তিনিই তাঁদের ব্যাঙ্ক লোন নেওয়া কথা বলেছিলেন। লোন করিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। সেজন্য ওই মহিলাকে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট তৈরির কথা বলা হয়েছিল।
ওই মহিলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও তৈরি হয়েছিল বলে খবর। কিন্তু কোনও কাগজপত্র ওই পরিবার আর হাতে পাননি। অভিযোগ, লোনের বিষয়ে ওই দম্পতি কিছু কথা জানতেও পারেননি। গতকাল, শনিবার রাতে ওই দম্পতির বাড়িতে ব্যাঙ্কের একটি নোটিশ আসে। সেখানে জানানো হয় প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ট্রানজাকশনও হয়েছে বলে খবর। কিন্তু সেই বিষয়ে কিচ্ছু জানতেন না ওই পরিবার। কোনও টাকা ওই পরিবার হাতে পাননি বলেই ওই পরিবার দাবি করেছেন। এদিকে মাসিক কিস্তির টাকা কীভাবে দেওয়া যাবে? সেই নিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে ওই পরিবারের।
এই নোটিশ পাওয়ার পর ওই গৃহবধূ একাধিকবার অভিযুক্ত প্রজিত ভদ্রের বাড়ি গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। উপরন্তু অভিযুক্তের পরিবার ওই মহিলাকে গালিগালাজ, অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই পরিবার শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।