বোলপুর থানার আইসি রিটন হালদারকে কুমন্তব্যের জেরে দলের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তারির দাবি জানিয়েছে বিজেপি। ফোনের কথোপকথনে পুলিশ কর্মীর মহিলা পরিজনদের নিয়েও অশ্রাব্য ভাষা শোনা গিয়েছে অনুব্রতর গলায়। সেই প্রসঙ্গ টেনে রবিবার খড়্গপুরের মহিলা তৃণমূল কর্মী প্রীতি, বৈশাখীদের আক্রমণ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের। এখন কেন মহিলাদের বিরুদ্ধে এরকম মন্তব্যে প্রতিবাদ করছেন না প্রীতি, বৈশাখীরা, প্রশ্ন দিলীপের।
উল্লেখ্য, খড়্গপুরে একটি রাস্তা উদ্বোধনে গিয়ে প্রীতি, বৈশাখী-সহ মহিলা তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় দিলীপকে। সেই সময়ে মহিলা তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে দিলীপের কিছু মন্তব্য নিয়েও চরম বিতর্ক হয়েছিল।
সেই পরিপ্রেক্ষিতেই দিলীপ এ দিন বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে, এই খড়্গপুরে কিছু মহিলা রাস্তায় নেমে আমাদের বিরুদ্ধে উৎপাত করেছিল! আমি তাদের চমকেছিলাম বলে কলকাতায় শশী পাঁজা সহ আরও কয়েকজন তাঁদের নিয়ে মিছিল করেছিল। এখান থেকে মহিলাদের নিয়ে গিয়ে মিছিল করা হয়েছিল। আমার প্রশ্ন, এখন সেই মহিলা নেত্রীরা এখন কোথায়? ওই পুলিশ কর্মীদের মা-বোনেরা কি মহিলাদের মধ্যে পড়েন না?’
যদিও এর পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মহিলা তৃণমূল কর্মী প্রীতি। তাঁর বক্তব্য, ‘উনি তো নিজেই স্বীকার করলেন মহিলাদের কুকথা বলেছেন বলে। আমি বিজেপি-র কাছে অনুরোধ রাখব অবিলম্বে ওঁকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বহিষ্কার করে দেওয়ার জন্য।’ প্রীতির পাশে দাঁড়িয়ে ৬নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার প্রদীপ সরকার বলেন, ‘অনুব্রত ইস্যুতে আমাদের দল যা করার করছে...আমার ওয়ার্ডে এসে মহিলাদের কুকথা বলার জন্য, নোংরা কথা বলার জন্য বিজেপির উচিত দিলীপ ঘোষকে বহিষ্কার করে দেওয়া।’
বস্তুত, অনুব্রতর অডিয়ো কাণ্ডে ফের চর্চায় উঠে এল গত ২১ মার্চের খড়্গপুর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের ভবানীপুর-মাঠপাড়ার সেই ঘটনা। ওই এলাকায় একটি কংক্রিটের ঢালাই রাস্তার উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সেই সময়েই মহিলা তৃণমূলের কর্মী প্রীতি কাড়ার, বৈশাখী সাহারা দিলীপ ঘোষের উদ্দেশে কটাক্ষ করেছিলেন, ‘আগে তো আপনাকে দেখতে পাইনি স্যার...এখন আমাদের কাউন্সিলর রাস্তা তৈরি করে দেওয়ার পর এসেছেন?’
পাল্টা দিয়েছিলেন দিলীপও। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তাঁর আক্রমণ ছিল, ‘টাকা দিয়েছি, তাই এসেছি! কারুর বাপের টাকা নয়...যাও গিয়ে প্রদীপকে জিজ্ঞাসা কর।’ পাল্টা তেড়ে এসেছিলেন প্রীতিরাও। প্রীতি গর্জন করে উঠেছিলেন, ‘আপনি বাপ তুললেন কেন? আপনি যে একজন সাংসদ ছিলেন!’ দিলীপ বলেন, ‘বেশ করেছি বাপ তুলেছি! চোদ্দপুরুষ তুলব...বেশি চিৎকার করলে গলায় পা তুলে দেব!’