ছুটির দিনে মজা করতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হলো দুই বন্ধুর। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে সন্দীপ সিং (১৩) তার বন্ধু রাহুল সিং (১৩) এর বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে দু’জনে একসঙ্গে বসে জমিয়ে মাংস-ভাত খায়। এর পর দুই বন্ধু বাড়ির পিছনে গিয়ে মদ্যপানও করে। এর পর রবিবার সকাল থেকে দু’জনের বমি, শ্বাসকষ্ট ও অসহ্য গলা-বুক জ্বালা শুরু হয়। সে সময়ে রাহুলের দিদি ঊষা সিং স্থানীয়দের সাহায্যে তাঁদের কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই সন্দীপের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন রাহুল। রবিবার রাতে তারও মৃত্যু হয়েছে।
পরিবার সূত্রের খবর, দুই বন্ধু রাহুল ও সন্দীপ সারাদিন একসঙ্গেই থাকত। সন্দীপের বাড়ি খড়্গপুর গ্রামীণ থানার ভালুকমাচা এলাকায়। তার বাবা মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের কাজ করেন। মাও বিভিন্ন জায়গায় লেবার হিসেবে কাজ করেন। সন্দীপ ও তার দাদা কেশিয়াড়ির পতিবাঁধ এলাকায় মামাবাড়িতে থাকে। সন্দীপের বাবা অনলাইনে ছেলেদের টাকা পাঠাতেন। সেই দিয়ে তাদের সংসার চলত। এ দিকে, রাহুলের বাড়ি কেশিয়াড়ির পতিবাঁধে। তার বাবা-মা পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে রাহুল আর তার দিদি ঊষা থাকত। শনিবার সন্দীপের বাবা টাকা পাঠানোর পরে দুই বন্ধু মাংস ও মদ কিনে আনে। তার পরেই রবিবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঊষা বলে, ‘রাতে আমরা তিনজন একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছিলাম। এর পর ওরা মদ খেতে বাড়ির পিছনে যায়। তখন আমি ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ি। ওরা অনেক রাতে এসে ঘুমিয়েছিল। ভোরের দিকে আমার ভাই এসে বলে, দিদি বুকে খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। গলা জ্বালা করছে। তার আগে ওরা বমিও করে। সন্দীপ কিছু বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিল না। আমিই পাশের বাড়ির জেঠু ও পাড়ার লোকেদের ডেকে আনি। তার পর হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
পুলিশ সূত্রের খবর, রাহুলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রবিবার ১২টা নাগাদ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সন্দীপের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কেশিয়াড়ির ভারপ্রাপ্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অর্পণ মণ্ডল বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পরে পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হবে।’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আমরা গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। সমস্ত বিষয়টাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।