নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: দাম্পত্য কলহের মাঝে স্ত্রীকে শাবল দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন। রক্তাক্ত স্ত্রীয়ের সঙ্গে ছেলেকে বাড়িতে তালাবন্দি করে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করল অভিযুক্ত স্বামী! রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে ধানতলা থানা এলাকার হুদা গ্রামে। মৃতের নাম মুসলিমা মণ্ডল(৩৪)। এদিকে, ঘটনার কথা জানি হতেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। অভিযুক্তের বাড়ি এবং দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার পর প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় বিশাল পুলিস ও র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার পাঁচপোতা গ্রামের বাসিন্দা নিহত মুসলিমার সঙ্গে বছর পনেরো আগে বিয়ে হয় নদীয়ার ধানতলা থানার হুদার বাসিন্দা শরিফুলের। বাড়িতে রয়েছে তাদের দুই ছেলে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন কারণে মুসলিমার উপর অত্যাচার চালাত শরিফুল। মাঝেমধ্যেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার দাবিতে স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দিত সে। রবিবার দুপুরে অশান্তি চরমে ওঠে। তখন বাড়ির মূল দরজায় তালা দিয়ে স্ত্রীকে লোহার শাবল দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করে অভিযুক্ত। সেইসময় তাদের বড় ছেলে চিৎকার শুনে বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় মা মাটিতে পড়ে ছটফট করছে। এদিকে, রক্তাক্ত স্ত্রীয়ের সঙ্গে ছেলেকে বাড়িতে রেখে শরিফুল সাইকেল চালিয়ে সটান চলে আসে ধানতলা থানায় এবং আত্মসমর্পণ করে। দম্পতির বড় ছেলে হাবিবুল মন্ডল বলেন, "আমি বাথরুমে গিয়েছিলাম। মায়ের চিৎকার শুনে বেরিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় মা লুটিয়ে পড়ে রয়েছে। ততক্ষণে বাবা বেরিয়ে গিয়েছে বাড়ি থেকে। আমি কোনওমতে চেঁচিয়ে আশে পাশের বাড়ির লোকজনকে ডাকি। মাঝেমধ্যেই বাবা মাকে মারধর করত।" মৃতার দিদি আনোয়ারা মণ্ডল বলেন, "বিয়ের পর থেকেই বোনকে টাকার জন্য চাপ দিত। নিজের ভাগের জমি বিক্রি করেও টাকা দিয়ে দিয়েছিল বোন। আমরা শরিফুলের কঠোর শাস্তি চাই।"এদিকে, মুসলিমার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাপের বাড়ির এলাকা থেকে বহু লোকজন এসে জমায়েত হয় শরিফুলের বাড়ির সামনে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারাও। অভিযুক্তের বাড়ি এবং দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা করে উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় ধানতলা থানার বিশাল পুলিসবাহিনী এবং র্যাফ। পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হলে উত্তেজনা বাড়ে। শেষপর্যন্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছান রানাঘাট জেলা পুলিসের ডিএসপি(সীমান্ত) সোমনাথ ঝাঁ। তাঁর মধ্যস্থতায় বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করতে সক্ষম হয় পুলিস। যদিও খুন এবং পারিপার্শ্বিক ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি পুলিসের পদস্থ কর্তারা।