সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন ডুয়ার্সের চারটি চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া। প্রতিবাদে বাগান ম্যানেজারের অফিসের সামনে ধর্না ও বিক্ষোভে নামলেন চা শ্রমিকরা। রবিবার সকাল থেকে তৃণমূল চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের উদ্যোগে নিউ ডুয়ার্স ও চুনাভাটি চা বাগানের প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক এদিন আন্দোলনে নামেন। সোমবারের মধ্যে বকেয়া মজুরি না দেওয়া হলে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধে নামার হুমকি দিয়েছেন শ্রমিকরা।
কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন অ্যান্ড্রু ইউলের চারটি চা বাগান নিউ ডুয়ার্স, বানারহাট, চুনাভাটি ও কারবালা রয়েছে। ৬ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। রবিবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত নিউ ডুয়ার্স ও চুনাভাটি বাগানের ম্যানেজারের অফিসের সামনে শ্রমিকরা ধর্না বিক্ষোভে অংশ নেন। চুনাভাটির শ্রমিক নাদিরা কামি জানান, ৬ মাস ধরে আমাদের মজুরি বাকি রয়েছে। আমরা তাও কাজে আসছি। এভাবে কতদিন চলবে? সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাই ধর্নায় বসেছি।
এদিন ধর্না বিক্ষোভে ছিলেন স্টাফরা। চুনাভাটি চা বাগানের বড়বাবু মিন্টু সেনগুপ্ত জানান, শুধু বকেয়া নয়, ২০২৩ সালের জুলাইয়ের পর পিএফ জমা পড়েনি। একজনের বদলে অন্যজনকে কাজ দেওয়া হচ্ছে না। শ্রমিকদের ভাঙা ঘর মেরামত করা হচ্ছে না। আমরা তাই শ্রমিকদের পাশে থেকেই আন্দোলনে ছিলাম। আর এক শ্রমিক নিউ ডুয়ার্সের কনিকা রাউতিয়া জানান, দু’মাস আগে ১৭নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেও বকেয়া পাইনি। ২৭মে অবরোধ করার পর ২৯মে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন বাগান কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরেও দেয়নি। আমরা ফের ১৭নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করব। এবার অবরোধ চলাকালীন অনস্পট বকেয়া না মেটালে অবরোধ ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে শ্রমিকরা জানান।
এদিন শ্রমিকদের ধর্না বিক্ষোভে তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা সঞ্জয় কুজুর অংশ নিয়ে শ্লোগান দেন। তিনি জানান, ২৯মে প্রধানমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারে আসার আগে বকেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছিল শ্রমিকরা। শ্রমিকদের ৬মাসের মজুরি এবং স্টাফ ও সাবস্টাফদের ৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কর্তৃপক্ষ শুধুই আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই এই চারটি চা বাগানের বকেয়া মেটানোর ক্ষেত্রে। চা শ্রমিকরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামলে আমরা পাশে রয়েছি। আন্দোলনের প্রভাবে কোনও সমস্যা হলে কেন্দ্র সরকার ও বাগান কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
এই বিষয়ে জলপাইগুড়ির বিজেপি সভাপতি শ্যামল রায় জানান, তৃণমূলের কাজই শ্রমিকদের উসকে দেওয়া। আমি চেষ্টা করছি রাজ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে। চুনাভাটি চা বাগানে বিক্ষোভ শ্রমিকদের। - নিজস্ব চিত্র।