বিষ্ণুপুরে রাস্তা, নদীবাঁধ, কালভার্ট সংস্কার নিয়ে প্রস্তাব গেল জেলা প্রশাসনের কাছে
বর্তমান | ০৯ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বর্ষার মরশুমে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা। তাই বর্ষার আগেই বিষ্ণুপুর মহকুমায় রাস্তা, কালভার্ট, নদীবাঁধ সহ একগুচ্ছ সমস্যার সমাধানের প্রস্তাব গেল জেলা প্রশাসনের কাছে। তার মধ্যে কোথাও খালের ভাঙনে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। আবার কোথাও নদের বাঁধ উপচে প্লাবনের আশঙ্কা। কোথাওবা বেহাল রাস্তা। আবার কোথাও রাস্তা তৈরিতে ঢিলেমির অভিযোগ। ওই সমস্ত সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের কাছ থেকে প্রস্তাবাকারে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন প্রতিটি সমস্যা ধরে ধরে আলোচনা করেছে। এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তার দ্রুত সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বিভিন্ন ব্লক থেকে উঠে আসা সমস্যাগুলি নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট লেভেল ডেভেলপমেন্ট মনিটরিং কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। সেইসঙ্গে সংশিষ্ট বিভাগকে তার সমাধানের ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনামুখীর পূর্ব নবাসন গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তর পলসুরা গ্রামে দামোদরের বন্যায় ফিবছর এলাকায় প্লাবন সৃষ্টি হয়। তাই ওই এলাকায় রিভার প্রোটেকশন ওয়াল তৈরির জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। আবারও একই দাবি এসেছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে দামোদর হেডওয়ার্কস ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে জানানো হয়েছে। তাঁরা প্রকল্পের এস্টিমেট তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে জয়পুরের সমুদ্রবাঁধে গত বছর বর্ষায় জলের তোড়ে লকগেটের একাংশ ভেঙে যায়। কিন্তু আজও তা মেরামত করা হয়নি। জেলা প্রশাসনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়েছে। এগ্রি ইরিগেশন বিভাগ ইতিমধ্যে প্রকল্প তৈরি করে জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এছাড়া ইন্দাসে দেব খালের ধারে অবস্থিত সেখডাঙা শিশুশিক্ষা কেন্দ্র। খালের ভাঙনে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বিল্ডিং তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে খালের পাড় বাঁধানোর দাবি জানিয়ে আসছেন। অবশ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে শীঘ্রই সেখানে কাজ আরম্ভ হবে। সোনামুখীর মানিকবাজার গ্রামপঞ্চায়েতের বাগমারি এলাকায় প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনায় তৈরি রাস্তা এবং ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ধানসিমলা গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত তিলডাঙা এলাকায় পূর্তদপ্তরের রাস্তা বেহাল হয়ে গিয়েছে। আগামী বর্ষায় তার হাল আরও খারাপ হয়ে যাবে। একইভাবে ভারী যান চলাচলের কারণে ডিহিপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় কুলডাঙা মোড়ে রাস্তা অত্যন্ত বেহাল হয়েছে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল এসআরডিএ এবং পূর্তদপ্তরকে রাস্তা মেরামতির জন্য বলা হয়েছে। পূর্তদপ্তর অবশ্য তাদের রাস্তাগুলি আরও ভালোভাবে তৈরি করার জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষেই প্রকল্প তৈরি করে দপ্তরে পাঠিয়েছে। কুলডাঙা মোড়ে চারটি হাম্প তৈরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও পাত্রসায়রের ফকিরডাঙা থেকে বসন্ত চণ্ডীতলা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার বেহাল রাস্তা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যাতে মেরামত করা হয়, সে ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব জমা পড়েছে। জেলা প্রশাসন এসআরডিএ-কে তা দ্রুত মেরামতির নির্দেশে দিয়েছে। অপরদিকে ইন্দাসের জিনকড়ায় প্রতিবছর বর্ষায় কজওয়ের উপর দিয়ে জল বয়ে যায়। তাই সেখানে একটি কালভার্ট তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। আবারও এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব জমা পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পূর্তদপ্তরকে বলা হয়েছে। এছাড়াও মহকুমায় আরও একাধিক বেহাল রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কোতুলপুরের বামুনাইরি কলতলা থেকে হাজরাপুকুর পর্যন্ত রাস্তা তৈরিতে ঢিলেমির অভিযোগও উঠেছে। অবশ্য এসআরডিএ কর্তৃপক্ষ ওই রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করার কথা জানিয়েছে।