• পোড়ামাটির টালি দিয়ে চলছে পুকুরের পাড় বাঁধাই, অভিনব উদ্যোগ কলকাতা পুরসভার
    বর্তমান | ০৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শালবল্লা ব্যবহার করে পুকুর বা জলাশয়ের পাড় বাঁধানোর কাজ হয়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন জলের সংষ্পর্শে শালকাঠ পচে যায়, ভেঙে পড়ে। এবার শালবল্লার বদলে পোড়ামাটির টালি ব্যবহার করে পুকুর বাঁধানোর কাজ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। পূর্ব পুটিয়ারির ইটখোলা এক এবং দু’নম্বর পুকুর নতুন করে কাটা হচ্ছে। সংস্কারের কাজ চলছে। সে কাজে জলাশয় বাঁধাতে পোড়ামাটির টালি ব্যবহার হচ্ছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পদ্ধতি কাঠের তুলনায় দীর্ঘমেয়াদী। 

    কুঁদঘাট মেট্রো স্টেশনের নীচে আদি গঙ্গা ওপারে পূর্ব পুঁটিয়ারি বাজার। সোজা এগলে বাঁ হাতে পরপর দু’টি বড় আকারের জলাশয় আছে। তা সংস্কারের কাজ চলছে। পুকুরের সীমানা পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। একটি জলাশয় প্রায় চার একরজুড়ে রয়েছে। অন্যটি প্রায় তিন একর এলাকাজুড়ে। নতুন করে মাটি কেটে প্রায় মজে যাওয়া পুকুরগুলি দখলদারির হাত থেকে বাঁচানো হয়েছে। এখন পুকুর বাঁধানোর কাজ চলছে। সেখানে এই প্রথম শালবল্লার বদলে পোড়ামাটির টালি দিয়ে পাড় বাঁধানো হচ্ছে। এই কাজে ব্যবহার হচ্ছে কয়েক লক্ষ টালি। পুরসভার নিকাশি বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, সিঁড়ি তৈরির পদ্ধতি মেনে তিন ধাপে টালি দিয়ে বাঁধানো হচ্ছে পাড়। 

    দু’টি টালি মাঝামাঝি ফাঁক রেখে বসিয়ে মাটি দিয়ে ভরাট হচ্ছে। ফলে জল টালির ভিতরের অংশ দিয়ে চলচল করবে। জলের সংষ্পর্শে টালি আরও শক্ত হবে। শালবল্লা পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টালি পচবে না। পুকুর বাঁধাই টেকসই হবে। পাশাপাশি পুকুরের পাড়ের মাটির ক্ষয় রুখতে জিও-টেক্সটাইলের চাদর দিয়ে মুড়ে ফেলা হচ্ছে। জিও টেক্সটাইল ম্যাট হল বিশেষ ধরনের টেক্সটাইল যা মূলত মাটি বা পাথরের সঙ্গে কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন, রাস্তা নির্মাণ, বাঁধ তৈরি, রিটেইনিং ওয়াল তৈরি ইত্যাদি। জিও টেক্সটাইল ম্যাট সাধারণত সিনথেটিক অথবা প্রাকৃতিক তন্তু দিয়ে তৈরি। এটি মাটি বা পাথরের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করে এবং ক্ষয় হ্রাসেও সাহায্য করে। এর প্রধান কাজ মাটি বা পাথরের স্তরগুলি আলাদা রাখা, জল নিষ্কাশন, মাটি শক্তিশালী করা, জল বা বাতাসের ক্ষয় প্রতিরোধ। 

    উল্লেখ্য, পুরসভার নিকাশি বিভাগ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ অনুদান পেয়েছে। অর্থপ্রাপ্তির শর্ত, পরিকাঠামগত উন্নয়নের কাজের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের কাজ করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই পুরনো পুকুর সংস্কারে হাত দিয়েছে নিকাশি বিভাগ।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)