• নিমতলায় রবীন্দ্রনাথের সমাধি নেশার ঠেক, জুতোর ধুলোয় ধূসরিত হচ্ছে পবিত্র প্রাঙ্গণ
    বর্তমান | ০৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমাধি প্রাঙ্গণে বসে গাঁজা সেবন। বিড়ি-সিগারেটে সুখটান। মোবাইলে গেম খেলা। পায়ের উপর পা তুলে আড্ডা। প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই বলে দিনের পর দিন নিমতলায় এই কাণ্ড ঘটেই চলেছে। ওই এলাকারই কিছু যুবক-কিশোর নেশার ঠেক হিসেবেই ব্যবহার করছেন সমাধিস্থল। 

    অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিজয় উপাধ্যায় পর্যন্ত বলেছেন, ‘যে সংস্থাকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে তারা আদৌ কোনও কাজ করে না। নাম কা ওয়াস্তে সিকিউরিটি রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমাধি শুধু নয়, প্রফুল্ল চন্দ্রের সমাধিস্থলেরও একই অবস্থা। ওটা উদ্বোধন পর্যন্ত হয়নি। গোডাউন করে রেখেছে। মনীষীদের প্রতি ওদের কোনও আবেগ নেই। তাই রবীন্দ্রনাথের সমাধিস্থল আড্ডা, গাঁজার ঠেক হয়ে উঠেছে। পুর কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’

    নিমতলায় ভূতনাথ শিব মন্দিরের পিছনে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমাধি প্রাঙ্গণ। ভূতনাথ মন্দির এবং নিমতলার ইলেকট্রিক চুল্লির পাশে সমাধিস্থলে ঢোকার পথ। প্রাঙ্গণ মার্বেলে মোড়া। গঙ্গার পাড়ে। সাজানো গোছানো জায়গা। রয়েছে অনেক গাছ। সমাধিস্থলের একটু দূরে গঙ্গার পাড় ঘেঁষে বসার জায়গা। অনেকেই সেখানে আসেন। দেখভালের জন্য নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছে। সমাধিস্থল এবং সংলগ্ন জায়গাটি সকলেই ঢুকতে পারেন। অভিযোগ, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিমতলা, আহিরীটোলার এবং ট্রেন লাইনের ধারে বসবাসকারী কিছু যুবক সমাধিস্থলে নিয়মিত আড্ডা জামান। নেশার ঠেক হিসেবে ব্যবহার করেন পবিত্র স্থানটি। মূল সমাধিস্থল ছাউনি দিয়ে ঘেরা। রোদের হাত থেকে বাঁচতে অনেকে ছাউনির তলায় এসে বসেন। এর পাশাপাশি ওই যুবকরা আসেন আড্ডা দিতে। তাঁরা জুতো পরে সমাধিতে উঠতে দ্বিধা করেন না। বিড়ি-সিগারেটে দেদার সুখটান দেন। একটু আড়াল রেখে চলে গাঁজায় টান। মোবাইলে গেম খেলা তো চলেই। 

    নিয়মিত এসব হচ্ছে। তা সত্ত্বেও নজরদারির কোনও বিষয় নেই। শ্মশানের নিরাপত্তারক্ষী বাধা দেন না। পাশে পুলিসের আউট পোস্ট। পুলিসও দেখেও দেখে না বলে অভিযোগ। সমাধিস্থলে আসা মানুষের বক্তব্য, ‘জায়গাটি ঘিরে দিলে সমাধির উপর বসার সুযোগ মিলবে না। এই নেশাড়ুদের ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়। এর ফলে কবিগুরুর সম্মানহানি হচ্ছে। অনেক বিদেশি সমাধি দেখতে আসে। কলকাতার সম্মান নষ্ট হচ্ছে। বাংলার ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)