ভুয়ো ভাউচার তৈরি করে প্রায় এক কোটি ৪০ লক্ষ টাকা জালিয়াতি! ধৃত ব্যাঙ্ক আধিকারিক
আনন্দবাজার | ০৯ জুন ২০২৫
ভুয়ো ভাউচার তৈরি করে প্রায় এক কোটি ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক অফিসারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতের নাম মনোজিৎকুমার সিংহ। শুক্রবার তাঁকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে ১৪ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। প্রতারণার এই ঘটনায় এর আগে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। তাঁদের মধ্যে এক জন ধৃত অফিসারের স্ত্রী মেঘনা সিংহ। অপর জন ওই অফিসারের বন্ধু আসমুখ। আসমুখকে ওড়িশার রায়গড়া থেকে ধরা হয় এক সপ্তাহ আগে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত মার্চ মাসে নিজেদের তরফে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করার পরে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে এক কোটি ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেন পার্ক স্ট্রিট থানায়। ব্যাঙ্কের তরফে তদন্ত শুরু হওয়ার পরেই বেপাত্তা হয়ে যান আদতে রায়গড়ার বাসিন্দা মনোজিৎ। প্রায় তিন মাস গা-ঢাকা দিয়ে থাকার পরে শুক্রবার তিনি কলকাতায় পুলিশের জালে ধরা পড়েন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ব্যাঙ্কের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনার নামে ভুয়ো ভাউচার তৈরি করে তা ব্যাঙ্কে জমা দিতেন মনোজিৎ। ওই ভাবে গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে বহু টাকা সরিয়েছেন তিনি। সেই টাকা প্রথমে যেত তাঁর বন্ধু, ধৃত আসমুখের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আসমুখ আবার তা পাঠিয়ে দিতেন মনোজিতের অন্য একটি অ্যাকাউন্টে। তার পরে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে নগদ টাকা তুলে নিতেন মনোজিৎ।
এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, মনোজিতের জমা দেওয়া ভাউচার যাচাই করার কথা অন্য কারও। কিন্তু বিধি ভেঙে মনোজিৎ নিজেই তা করতেন। আর সেই সুযোগে যথেচ্ছ ভাবে টাকা সরাতেন। মনোজিৎ নিজেই যাচাইয়ের দায়িত্বে থাকায় প্রথমে কেউ সন্দেহও করেননি তাঁকে। এ ভাবেই প্রায় এক কোটি ৪০ লক্ষ টাকা সরানো হয়েছিল।
ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। অনলাইন বেটিংয়ের নেশা ছিল তাঁর। জালিয়াতির টাকা তাতেই লাগানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন মনোজিৎ। পুলিশ সব কিছু খতিয়ে দেখছে বলে সূত্রের দাবি।