ভোটের আগে আদালতে অস্বস্তি এড়ানোই লক্ষ্য, কোর্টের নির্দেশে গড়া সব সরকারি কমিটির তথ্য চাইল নবান্ন
আনন্দবাজার | ০৯ জুন ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন দফতরে বর্তমানে কতগুলি কমিটি কাজ করছে, সেই সব কমিটির সদস্য কারা, কী কাজ হচ্ছে, ক’টি বৈঠক হয়েছে এবং আদৌ কোনও রিপোর্ট জমা পড়েছে কি না— এই সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য এ বার সরাসরি চেয়ে পাঠিয়েছে নবান্ন। কর্মী ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের পক্ষ থেকে মে মাসের শেষ দিকে এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে রাজ্যের প্রতিটি দফতরের সচিবকে। মনে করা হচ্ছে, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাতে আদালতের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকারকে কোনও অস্বস্তিতে পড়তে না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় নবান্ন।
প্রত্যেক দফতরকে বলা হয়েছে, তারা কতগুলি কমিটি গঠন করেছে, সেই সব কমিটিতে কারা রয়েছেন— সরকারি আমলা ছাড়াও বাইরের কোনও বিশেষজ্ঞ বা ব্যক্তিত্ব যুক্ত থাকলে তাঁদের নাম-পরিচয়-সহ তালিকা দিতে হবে। কমিটির কাজ কত দূর এগিয়েছে, কত বার বৈঠক হয়েছে এবং তা থেকে আদৌ কোনও রিপোর্ট প্রস্তুত হয়েছে কি না— এ সব তথ্য-সহ পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আগামী সপ্তাহের মধ্যেই জমা দিতে হবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকারের অধীনে অনেক কমিটি গঠিত হয়েছে। কখনও সুপ্রিম কোর্ট, কখনও হাই কোর্ট কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর নজরদারি ও সেগুলির বাস্তবায়নের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। যেমন, শিক্ষা দফতরের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি, স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি, নারী ও শিশু সুরক্ষা কমিটি কিংবা পরিবহণ দফতরের রোড সেফটি কমিটি। তবে এ সব কমিটি আদৌ কার্যকর কি না, কিংবা নিয়মিত কাজ করছে কি না— তা জানতে তৎপর হয়েছে নবান্ন। যদিও এই তথ্য চাওয়ার নেপথ্যে সরকারি ভাবে কোনও কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে প্রশাসনিক মহলের মতে, মূলত আদালতের নির্দেশ যথাযথ ভাবে মানা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতে চাইছে নবান্ন। আদালতের সামনে প্রমাণ রাখতে হবে যে, রাজ্য সরকার নির্দেশ পালন করছে— এই কারণেই সমস্ত কমিটি সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে নবান্ন।
নবান্নের এক কর্তা বলেন, “প্রতিটি দফতরের একাধিক কমিটি রয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট কাজের জন্য এ সব কমিটি তৈরি হয়, পরে কাজ শেষ হলে অনেক সময় তা ভেঙেও দেওয়া হয়। এ সব তথ্য একত্র করে একটি পূর্ণাঙ্গ ভান্ডার গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।” প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নবান্নের সচেতন পদক্ষেপ। যাতে ভবিষ্যতে আদালতের সামনে স্পষ্ট ও তথ্যভিত্তিক জবাব দেওয়া যায়, সে দিকে নজর দিতেই এমন সিদ্ধান্ত।