একই শয্যায় দু'জন রোগী। কারও-কারও আবার ঠাঁই হয়নি ঘরেও। বারান্দায় অস্থায়ী শয্যা দিয়ে রাখা হয়েছে রোগীকে। কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এই শয্যা-সঙ্কট নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগী ও রোগীর আত্মীয়েরা। দ্রুত অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই অবস্থার পরিবর্তন করতে একটি নতুন ভবন তৈরি করা হয়েছে। যেখানে পঞ্চাশটি শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। তা বাড়িয়ে আশিটি পর্যন্ত করা যেতে পারে। কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ ও সুপার সৌরদীপ রায় বলেন, ‘‘হাসপাতালে শয্যার তুলনায় রোগীর ভিড় অনেক বেশি। তাই পরিস্থিতি বুঝে আমাদের একটি শয্যায় দু'জনকে রাখতে হয়। রোগীরা এলে আমরা তো তাঁদের ফিরিয়ে দিতে পারি না। নতুন ভবনটি চালু হলে ওই সমস্যা অনেকটা মিটবে বলে আশা করছি।’’
কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল জেলা হাসপাতাল ছিল। ভৌগলিক কারণে সে সময় থেকেই ওই হাসপাতালের রোগীর ভিড় বেশি ছিল। বছর আটেক আগে ওই হাসপাতালে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করা হয়। সে সময় থেকে চাপ আরও বেড়ে যায়। ওই মেডিক্যাল কলেজের উপরে কোচবিহার তো বটেই, লাগোয়া জেলা আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির একটি অংশ পুরোপুরি নির্ভরশীল। আবার নমনি অসমের একটি অংশও ওই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত হওয়ার পরে হাসপাতালের একাধিক পরিকাঠামোগত উন্নতি করা হয়। বেশ কিছু নতুন বিভাগ চালু করা হয়। মা ও শিশুদের জন্য আলাদা করে 'মাতৃমা' বিভাগ চালু করা হয়। বাড়ানো হয় শয্যা সংখ্যাও। সবমিলিয়ে বর্তমানে শয্যা সংখ্যা ৬৭৮। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম বলে অভিযোগ।
শনিবার হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে গিয়ে দেখা যায় রোগীতে ঠাসাঠাসি। বেশির ভাগ শয্যায় দু'জন করে রোগী রয়েছেন। ভিতরে জায়গা না থাকায় বারান্দায় শয্যা পেতে রাখা হয়েছে অনেককে। দেওচড়াইয়ের বাসিন্দা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘বাবা বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। হয়তো স্ট্রোক করেছে। হাসপাতালে জায়গার খুব অভাব। তাই আমার বাবাকেও বারান্দায় রাখা হয়েছে।’’