ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সহ-শিক্ষকদের একাংশের বিবাদে কার্যত অচলাবস্থার পরিস্থিতি হয়েছে অন্ডাল উচ্চ বিদ্যালয়ে। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক পরিবর্তনের দাবিতে জেলা স্কুল পরিদর্শক, স্থানীয় বিধায়ক-সহ নানা জায়গায় চিঠি দিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। জেলা স্কুল পরিদর্শক সৌমেনচন্দ্র লাহা জানান, তিনি এখনও চিঠি হাতে পাননি। পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, স্কুলে নিয়ম-শৃঙ্খলা নেই। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃণালকান্তি সাহা রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে যান না। ইচ্ছেমতো স্কুলে আসেন ও বেরিয়ে যান। কয়েক জন শিক্ষককে নিয়ে নিজস্ব গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। তাঁদের বাকি শিক্ষকদের চেয়ে কম ক্লাস দেওয়া হয়। সেই সব শিক্ষকেরাও রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে যান না। ফলে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক স্কুলে থাকা সত্ত্বেও, সেখানে অন্য শিক্ষককে ‘প্রভিশনাল ক্লাস’ করতে হয়।
আরও অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক নিজের প্রশাসনিক কাজ না করে, তা অন্য শিক্ষকদের উপরে চাপান। ফলে, তাঁরা ক্লাস নিতে পারেন না। বরিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। মতান্তর হলে হুমকি দেওয়া হয়। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি তাঁর অফিসে ইংরেজির এক শিক্ষিকাকে বসিয়ে রেখে কম্পিউটারের কাজ ও নিজের কাজকর্ম করিয়ে নেন। ফলে, ওই শিক্ষিকা ক্লাস নিতে পারেন না। অথচ, স্কুলে দু’জন করণিক ও দু’জন কম্পিউটার শিক্ষক আছেন। ছুটির খাতা, আর্থিক বিষয়েও গরমিল রয়েছে বলে অভিযোগ।
স্কুলের শিক্ষক সুমন শ্যামের দাবি, ‘‘পরিচালন সমিতিতে শিক্ষকদের প্রতিনিধি নেই। তাই শিক্ষকদের বক্তব্য সেখানে জানানো যাচ্ছে না। স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের তরফে যোগাযোগ করা হচ্ছে না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের দাবি, ‘‘স্কুলের ভবন ভেঙে পড়ছে। ছাত্রছাত্রীরা চেয়ার-টেবিল ভাঙলে বা স্কুল চলাকালীন বেরিয়ে গেলেও, কোনও নজর দেওয়া হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে সব জানানো হলেও, তিনি গা করেন না।’’
রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্য শিক্ষকদের কাজে অসুবিধা করা, স্কুলের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের হিসাব না দেওয়া, এক শিক্ষিকাকে উচ্চ মাধ্যমিক চলাকালীন বিশেষ ছুটি মঞ্জুর করা-সহ নানা অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখছি।’’ ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘স্কুলের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। স্কুল চালাতে গেলে খুচরো সমস্যা কিছু তৈরি হয়। কিন্তু শিক্ষকদের সময়ে স্কুলে আসতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় স্কুলে থাকতে হবে।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক বলেন, ‘‘সবাইকে নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হবে। স্কুলের পরিবেশ যাতে সুস্থ থাকে, তা দেখা হবে।’’