• ‘সিভিল সার্ভিসে’ প্রথম স্থানে ডায়মন্ড হারবারের প্রিয়তোষ
    আনন্দবাজার | ০৯ জুন ২০২৫
  • সংসারে অনটন ছিল। তিনি হাল ছাড়েনি। পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। অবশেষে মিলল সাফল্য। 'ডব্লুবিসিএস এক্সিকিউটিভ'-এ প্রথম স্থান অধিকার করলেন ডায়মন্ড হারবারের প্রিয়তোষ পিপলাই। তাঁর এই সাফল্যে খুশির হাওয়া এলাকা জুড়ে। প্রথম হওয়ার খবর শুনে রবিবার সকাল থেকেই শুভেচ্ছা জানাতে আত্মীয়, প্রতিবেশী ও বন্ধুরা ভিড় জমালেন বাড়িতে।

    ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ন'নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগর পল্লিতে মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকেন বছর উনত্রিশের প্রিয়তোষ। তাঁর সাফল্যের পিছনের যাত্রাপথ মোটেই সহজ ছিল না। বাবা তপন পিপলাই মারা যাওয়ার পরে পরিবারে চরম অর্থাভাব শুরু হয়। পাঁচ বছরের প্রিয়তোষকে নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু করেন তাঁর মা মৌসুমি। গৃহ শিক্ষকতা করে সংসার চালান।

    ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত প্রিয়তোষ সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষামন্দির থেকে মাধ্যমিক ও বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে 'ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং' পাশ করেন। ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৭ সালে কাজে যোগ দেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেন। ২০২১ সালে 'ডব্লুবিসিএস' দিয়ে গ্রপ-সি'তে জায়গা করে নেন প্রিয়তোষ। ২০২৪ সালে 'অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার' হিসেবে বেলেঘাটায় যোগ দেন। ২০২২ সালে ফের 'সিভিল সার্ভিস' পরীক্ষা দেন। সম্প্রতি তার ফল প্রকাশিত হলে জানা যায় 'এক্সিকিউটিভ'-এ প্রথম স্থান অধিকার করেছেন প্রিয়তোষ।

    প্রথম হওয়ার কৃতিত্ব মাকেই দিতে চান প্রিয়তোষ। তিনি বলেন, ‘‘খুবই ভাল লাগছে। আশা ছিল ভাল ফল করব। তবে প্রথম হব ভাবিনি। আমার সফলতার পিছনে মায়ের অবদান আছে। অনেক বাধা-বিপত্তি এসেছে, কিন্তু ধৈর্যচ্যুত হইনি। গান শোনা, ক্রিকেট, সিনেমা, গল্পের বই কিছুই বাদ দিইনি। পড়েছি নিয়ম করে।’’ ছেলের সাফলে খুশি মা মৌসুমি। তিনি বলেন, ‘‘অনেক অভাব অনটনের মধ্যে ছেলেকে বড় করেছি। কিন্তু ও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। ছেলের জন্য আমিও গর্বিত।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)