দিঘার জগন্নাথ দেবকে নিবেদিত আজকের খোয়া ক্ষীরই বিলি হবে রাজ্যে
প্রতিদিন | ০৯ জুন ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মহাপ্রভু সাক্ষী, জগন্নাথ মন্দিরে চলছে নিত্য উপাচার, ভোগ নিবেদন। পুরীর মন্দিরে মা বিমলাকে নিবেদন করে সেই ভোগ প্রভু জগন্নাথকে দেওয়া হয়। তাতেই সেই ভোগ পরিণত হয় মহাপ্রসাদে। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরেও ঠিক তেমন। মা বিমলাকে নিবেদন করা ভোগ নিবেদন করা হয় মহাপ্রভুর সামনে। সেই ভোগ মহাপ্রসাদে পরিণত হয়।
সোমবার বেলায় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মহাপ্রভুকে নিবেদন করা সেই মহাপ্রসাদের খোয়া ক্ষীরই বিলি হবে রাজ্যজুড়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিপূর্বে সেই ঘোষণা করেছেন। আজ সকালের মধ্যেই কলকাতার নির্দিষ্ট জায়গা থেকে খোয়া ক্ষীর পৌঁছবে জগন্নাথ মন্দিরে। বেলা সাড়ে ১১টায় সেই খোয়া ক্ষীর ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হবে। তা মহাপ্রসাদ হয়ে এলে আজই তা বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন গাড়িতে তা রওনা হবে জেলায় জেলায় বিলির জন্য।
কালীঘাটের মায়ের মন্দিরের সঙ্গে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের বিশেষ সূত্রে যোগ রয়েছে। সেই সূত্রেই কালীঘাটে মায়ের ভোগে যে পেঁড়া দেওয়া হয়, সেই পেঁড়াকেই জগন্নাথ দেবের ভোগ হিসাবে রাখা ঠিক হয়েছে। মন্দিরের নিত্যপুজোর দায়িত্বে থাকা ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস জানাচ্ছেন, “কালীঘাটের মা কালীই তো জগন্নাথ মন্দিরের মা বিমলা। সেই মা-কে ভোগ নিবেদন করলে ভোগ মহাপ্রসাদ হয়ে যায়। তখনই তা মহাপ্রভুকে নিবেদন করা হয়।”মহাপ্রভুকে নিবেদন করা আজকের সেই খোয়া ক্ষীর মিশবে যে সন্দেশে তা-ও আরও কিছুটা খোয়া ক্ষীরে তৈরি। প্রসাদের গজা আর পেঁড়ার সঙ্গে খোয়া ক্ষীরের সেই সন্দেশই উঠবে রাজ্যজুড়ে মানুষের হাতে হাতে।
এই প্রেক্ষিতেই মহাপ্রসাদ নিয়ে বিতর্কে তাঁর বক্তব্যও রেখেছেন রাধারমণ দাস। ইসকনের রথযাত্রা শেষে ময়দানে রাখা থাকে সেই রথ। সেখানে এক লক্ষ মানুষের জন্য খিচুড়ি ভোগ রান্না হয়। রাধারমণ জানাচ্ছেন, একটা কন্টেনারে যদি ৫০ হাজার মানুষের জন্য খিচুড়ি রান্না হয়, সেই খিচুড়ি থেকে কিছুটা খিচুড়ি নিয়ে গিয়েই তো জগন্নাথ দেবকে ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়। সেই ভোগ জগন্নাথদেব গ্রহণ করার পর মহাপ্রসাদ হয়ে যায়। সেই প্রসাদই তো মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়। পুরীর জগন্নাথদেব হলেন মূল। তাঁর নিয়ম মেনে সর্বত্র এই এক রীতি।
১১ জুন জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা। এই স্নানযাত্রার পর মহাপ্রভুর জ্বর আসে। ১২ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত শাস্ত্রীয় বিধি মেনে সেই সময়টায় ভক্তদের দর্শন বন্ধ। ২৬ জুন অর্থাৎ রথযাত্রার একদিন আগে আবার মন্দিরের দ্বার খুলবে। ওই দিন বিপুল জনসমাগম হবে ধরে নিয়েই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। একইভাবে রথযাত্রার ন’দিনের মাথায় ৫ জুলাই উল্টো রথের দিনও নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা রয়েছে। তবে পুরীর মন্দিরের রীতিতে যেমন সেই শাস্ত্রীয় বিধি মেনে মন্দিরে ফেরার দিনই জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা ‘গৃহে’ ঢুকতে পারবেন না। লক্ষ্মীদেবী তাঁদের ঘরে ঢুকতে দেবেন না। ৬ ও ৭ জুলাই মন্দিরের বাইরেই রথে দর্শন দেবেন মহাপ্রভু। ৮ জুলাই মন্দিরে প্রবেশ করবেন তাঁরা।