এই সময়, মালবাজার: জঙ্গল লাগোয়া পর্যটনের ব্যবসার সঙ্গে জঙ্গলের প্রবেশাধিকারের নিয়ম কানুন একেবারে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে থাকে। সমগ্র দেশের জাতীয় বন ও পরিবেশের নিয়ম মেনে ১৫ জুনের পর তিন মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে জাতীয় ও সংরক্ষিত উদ্যানগুলো।
পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ থাকবে এই তিন মাস। আর এক সপ্তাহ বাকি জঙ্গল বন্ধ হতে। তাই পর্যটন ব্যবসারও লাস্ট ল্যাপের দৌড় চলছে।
ম্যারাথনে দীর্ঘ সময়ে ঢিমে তালে দৌড় চললেও অন্তিম পর্যায়ে এসে দ্রুত গতির দৌড় যেরকম নির্ণায়ক হয়ে ওঠে, ঠিক তেমনি ডুয়ার্সের পর্যটনেও এখন দ্রুত দৌড় চলছে। বেসরকারি স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি পড়তেই পাহাড়-ডুয়ার্সে বেড়াবার ঝোঁক অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে।
গরুমারা রিসর্ট ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত মোট ৭৩টি নানা ধরনের রিসর্ট রয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, ‘জঙ্গল বন্ধের শেষ পর্যায়ে ব্যবসায়ের গতি এসেছে, তবে গত বছরের তুলনায় সেই গতি অনেকটা কম।’
যাত্রপ্রসাদ, চাপড়ামারি, মেদলা, চন্দ্রচূড়ের মতো নির্দিষ্ট নজর মিনারগুলোর প্রতিটি শিফটে ভালো ভিড় হচ্ছে। অরণ্য সাফারির হুড খোলা জিপসির টিকিট সংগ্রহের ভিড় রয়েছে।
রিসপ থেকে শুরু করে দাওয়াই পানি, সর্বত্র আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় সূর্যোদয়ের দৃশ্য ভালোভাবে উপভোগ করছেন পর্যটকেরা। হিমেল বাতাস সঙ্গে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
তাই শেষ কয়েকদিনে বাড়তি উদ্দীপনার যোগ করেছে পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়। ধুপগুড়ির পর্যটক অর্ঘ্য সুর স্ত্রীকে নিয়ে পাহাড়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গিয়েছেন। টানা বৃষ্টির শেষে রোদ উঠতে ভ্রমণ প্ল্যান করে আখেরে যে ভালো প্রকৃতি দর্শন হয়েছে, তাতে বেজায় খুশি তিনি।
মালবাজারের ব্যবসায়ী বান্টি সাহা তাঁর মামার সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছেন দাওয়াই পানিতে। হিমালয় যেন উদ্ভাসিত হয়ে ফুটে উঠেছে বলে জানান তিনি। অন্য পর্যটকেরাও ভীষণ খুশি।
সব মিলিয়ে সিকিমের তিস্তার ভয়াল রূপ, উত্তর সিকিমের বিভিন্ন রুট বন্ধ সেই সব কারণেও দার্জিলিং কালিংবনের চেনা অজানা পাহাড়ি কেন্দ্রগুলোতে অল্পদিনে বাড়তি অক্সিজেন জুটে গিয়েছে। এবারে তা থেকে অর্থাগম পরিসংখ্যান হিসেবে গত বছরকে ছাপিয়ে যায় কি না, তার বিশ্লেষণ করতে অবশ্য আরও সময় লাগবে।