এই সময়: ভোট চাওয়ার আগে ভোটারদের ‘হিসেব’ বুঝিয়ে দিতে চায় বিজেপি।
বিধানসভা ভোটের আর এক বছরও দেরি নেই। বিজেপি ঠিক করেছে, পুজোর পর থেকেই তারা জোরকদমে শুরু করে দেবে নির্বাচনী প্রচার। সেই মতো সাংগঠনিক প্রস্তুতিও নিচ্ছে গেরুয়া শিবির।
কিন্তু তার আগে দলীয় বিধায়কদের নিজের নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারদের মুখোমুখি দাঁড়ানোর নির্দেশ দিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। অর্থাৎ, গত চার বছরে তাঁরা কে কী কাজ করেছেন, সেটা ভোটারদের সামনে গিয়ে বলতে হবে।
ছাপতে হবে সেই সংক্রান্ত পুস্তিকাও। এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েও কী কী কাজ করা সম্ভব হয়নি এবং কেন সম্ভব হয়নি, জনতার দরবারে তারও ব্যাখ্যা দিতে হবে বিধায়কদের। রবিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বালুরঘাটে এই কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী।
এর পরে দলের সব বিধায়কই ‘উন্নয়ন প্রতিবেদন’–এর ব্যানারে এই কর্মসূচিতে ঝাঁপাবেন বলে জানা গিয়েছে।
বেশ কিছু বছর ধরেই বিজেপির অভিযোগ, রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ ভাবে অসহযোগিতা করে তাদের দলের বিধায়কদের। যে বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে ’২১–এর ভোটে তৃণমূল হেরেছে, সেখানে উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার আর্থিক অনুদান ঠিক ভাবে দেয়নি বলেও গেরুয়া বিধায়কদের একাংশের দাবি।
বিজেপির আশঙ্কা, ’২৬–এর বিধানসভা ভোটে এর প্রভাব পড়তে পারে। তাই এখন থেকেই বিজেপির দখলে থাকা বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা মানুষকে জানিয়ে রাখতে চাইছে পদ্ম-শিবির।
দক্ষিণবঙ্গের এক বিজেপি বিধায়কের কথায়, ‘আমাদের কিছু ভুল–ত্রুটি আছে। কিন্তু রাজ্য সরকারও আমাদের ব্যর্থ দেখাতে চেয়েছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও নিজের এলাকায় কিছু কাজ আমরা করতে পারিনি। সেটাও মানুষকে জানানো প্রয়োজন।’
অশোক লাহিড়ী তাঁর ‘উন্নয়ন প্রতিবেদন’ পুস্তিকায় নিজের এলাকায় কী কী কাজ করেছেন, তা উল্লেখ করার পাশাপাশি বালুরঘাটে একটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির দাবিও জানিয়ে রেখেছেন।
তবে শুধু রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কথা জানানো অথবা বিধায়কদের কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরাই নয়, প্রার্থী ঝাড়াই–বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করার আগে নিজের এলাকায় বিধায়কদের গ্রহণযোগ্যতা কতটা, সেটাও বুঝে নিতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, ’২৬–এর বিধানসভা ভোটে দলের সব বিধায়ককে ফের টিকিট দিতে না–ও পারে বিজেপি। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যের বেশ কয়েকজন দলীয় বিধায়ক সম্পর্কে বিভিন্ন মহল থেকে ‘নেগেটিভ রিপোর্ট’ জমা পড়েছে দিল্লিতে। ওই বিধায়কদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সারবত্তা থাকলে তাঁদের ছেঁটে ফেলতে অমিত শাহরা যে দু’বার ভাববেন না, তা নিশ্চিত।