• ইলিশ মাছ কেনার নামে ব্যবসায়ীকে ডেকে এনে খুন করল পুলিশ! জালে অভিযুক্ত কনস্টেবল...
    আজকাল | ০৯ জুন ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে এক ব্যক্তিকে খুন করার অভিযোগে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার পুলিশ ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলার আমরাপাড়া থানায় কর্তব্যরত এক কনস্টেবল-সহ আরও একজনকে গ্রেপ্তার করল। ধৃত ওই পুলিশ আধিকারিক বিপিন কুমার পাঠক বলে জানা গিয়েছে। বাড়ি পাকুর জেলায়। এই খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে আবু সুফিয়ান নামে সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করে সোমবার তাদের আদালতে পেশ করা হচ্ছে।

    জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক জানান,গত মে মাসের ১৫ তারিখে সুতি থানার মধুপুর সংলগ্ন সাজুর মোড়ের কাছে গ্রামের রাস্তায় এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দেহে উদ্ধার হয়। এই ঘটনার তদন্ত করতে নেমে পুলিশ বিভিন্ন থানায়  মৃত ব্যক্তির ছবি পাঠায়। এরপরই পুলিশ জানতে পারে দেহটি আনন্দ রাজ (৩২) নামে পাকুড়  জেলার এক বাসিন্দার। ওই ব্যক্তি মুর্শিদাবাদ এবং মালদা জেলায় বিভিন্ন এলাকায় পাথর সরবরাহের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর ,আনন্দ রাজের সঙ্গে এই ব্যবসায় ঝাড়খণ্ড পুলিশের কনস্টেবল বিপিন কুমার পাঠকও জড়িত ছিল। দু'জনের

    একাধিক ভারী পণ্যবহনকারী গাড়ি ছিল এবং সেই গাড়ি করে ঝাড়খন্ড থেকে বিভিন্ন জায়গায় পাথর সরবরাহ করা হত। আনন্দ রাজ মূলত দেওঘরের বাসিন্দা হলেও গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসার সুবিধার জন্য পাকুড় পুলিশ লাইনের উল্টোদিকে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল। সেই সূত্রেই আনন্দ এবং বিপিন কুমার পাঠকের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি ব্যবসায়িক বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল। একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রচুর টাকা ধার নেওয়ার পর সেই টাকা শোধ  করতে না পারার জন্য আনন্দ সন্ধের পর বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। 

    পুলিশ সূত্রে খবর ,গত ১৪ মে সন্ধেবেলা আনন্দের বাড়িতে ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধুদের নিয়ে একটি পার্টি হয়। পার্টি শেষ হওয়ার পর আনন্দকে একটি গাড়িতে চাপিয়ে বিপিন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার উদ্দেশ্যে ইলিশ মাছ কেনার জন্য বের হন। ফরাক্কা ঢোকার আগে ঝাড়খন্ড পুলিশের ওই কনস্টেবল সামশেরগঞ্জ থানার ডাকবাংলো এলাকা থেকে তার ম্যানেজার আবু সুফিয়ানকে নিজের গাড়িতে তুলে নেয়।

    এরপর তিনজনে মিলে ফরাক্কা থেকে মাছ কিনে ফের যখন ঝাড়খন্ডের দিকে ফিরে যাচ্ছিল সেই সময় আবু সুফিয়ান এবং বিপিন কুমার পাঠক দু'জনে মিলে শ্বাসরোধ করে আনন্দ রাজকে গাড়ির মধ্যে খুন করে বলে অভিযোগ। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় একটি দোকান থেকে একটি ধারালো 'ব্লেড' কিনে গলা কেটে আনন্দকে খুন করে দেহটি সুতি থানা এলাকায় ফেলে ঝাড়খন্ডে পালিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ব্যক্তিরা এই খুনের কথা স্বীকার করে জানিয়েছে গত কয়েক মাসে আনন্দের বেশ কিছু ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের জন্য তাদের প্রচুর ক্ষতি হচ্ছিল। সেই কারণেই এই খুন বলে জানা যাচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)