• এত তাড়াহুড়ো কেন? টাকা কেন দিচ্ছেন! চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়া নিয়ে রাজ্যকে প্রশ্ন হাই কোর্টের
    আনন্দবাজার | ০৯ জুন ২০২৫
  • চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়া সংক্রান্ত রাজ্যের সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়ল কলকাতা হাই কোর্টে। সোমবার বিচারপতি অমৃতা সিংহ এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে প্রশ্ন তোলেন, এত তাড়াহুড়ো কিসের? সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কোনও রকম আলোচনা বা স্ক্রুটিনি ছাড়াই কেন তড়িঘড়ি এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, রাজ্যের কাছে তা জানতে চান তিনি। মৌখিক ভাবে এটি বন্ধ রাখার কথাও বলেন। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার জানানোর কথা বললে বিচারপতি সিংহ জানান, দুপুর ২টোয় ফের এটি শুনবেন তিনি।

    ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশের পর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে আন্দোলনে নামেন গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরাও। যার প্রেক্ষিতে শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করে রাজ্য সরকার। ওই বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-সহ একাধিক সরকারি আমলা উপস্থিত ছিলেন। টেলিফোন মারফত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয় চাকরিহারাদের। তখনই গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আপাতত গ্রুপ সি কর্মীদের রাজ্য সরকার প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে দেবে। আদালতে চাকরি বাতিলের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই ভাতা দেবে রাজ্য। পরে সরকারের তরফে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ইতিমধ্যেই প্রথম মাসের টাকা পেয়ে গিয়েছেন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা।

    রাজ্যের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। সোমবারের শুনানিতে মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য রাজ্যের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিল করার পরেও কী ভাবে কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর নাম করে রাজকোষের টাকা ব্যয় করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সংবিধানের ২৮২ নম্বর অনুচ্ছেদের প্রসঙ্গ তুলে বিকাশ জানান, সংবিধান জনস্বার্থে সরকারকে টাকা খরচ করার ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু চাকরিচ্যুতদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আদৌ জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে জানানোর কথা বলেন এজি। বিষয়টি দুপুরেই শুনবেন বলে জানান বিচারপতি সিংহ।

    প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলের গোড়ায় সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় দেয়। তাতে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের চাকরি যায়। নতুন নিয়োগের জন্য রাজ্যকে তিন মাস সময় দেয় শীর্ষ আদালত। পরে নতুন আবেদনের ভিত্তিতে তা বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এই সময়ের মধ্যে রাজ্যকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)