মাঝে ক’টা দিন, দিঘায় প্রথম বার গড়াবে রথের চাকা, সাজছে ‘মাসির বাড়ি’, গালিচায় ঢাকছে সমুদ্রসৈকত
আনন্দবাজার | ০৯ জুন ২০২৫
আর দিন পনেরোর অপেক্ষা। তার পর প্রথম বার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের রথের দড়িতে টান পড়বে। আলাদা আলাদা রথে চেপে জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রা যাবেন ‘মাসির বাড়ি।’ এক সপ্তাহ সেখানে কাটাবেন তাঁরা। তাই দিঘায় ‘মাসির বাড়ি’ ও সংলগ্ন এলাকা সেজে উঠছে নব কলেবরে। দিঘার জগন্নাথ মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস বলেন, “এই প্রথম বার দিঘায় রথের চাকা গড়াবে। যার জন্য তুঙ্গে রয়েছে প্রস্তুতির কাজ। আর এই রথযাত্রা উপলক্ষে মাসির বাড়ি-সহ আশপাশের এলাকাগুলিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।”
প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, দিঘা থানা থেকে কিছুটা এগিয়ে ওল্ড দিঘার সমুদ্রসৈকতে পুরনো জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গণকে দিঘার ‘জগন্নাথ ধাম’-এর মাসির বাড়ি হিসাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রা রথে চড়ে মাসির বাড়িতে আসবেন। সেখানে তাঁদের থাকার জন্য নয়নাভিরাম একটি নাটমন্দির তৈরির কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। হালকা গোলাপি রঙের একতলা নাটমন্দিরটির দেওয়ালে সুন্দর কারুকাজ করা হয়েছে। দুই পাল্লার দরজায় ঝুলছে বড় বড় দুটো পিতলের কড়া। শ্বেতপাথরে ঢাকা পড়েছে মেঝে।
আগের থেকে অনেকটাই চওড়া করা হয়েছে মূল সড়ক থেকে ‘মাসির বাড়ি’ যাওয়ার রাস্তা। প্রবেশপথে তৈরি হচ্ছে চৈতন্যদ্বারের আদলে সুউচ্চ ফটক। ওই ফটক ছাড়িয়ে মাসির বাড়ির পথে এগিয়ে গেলে নজরে পড়বে গাছগাছালিতে ঢাকা মনোরম পরিবেশ। মন্দিরের কাছে রথ রাখার জন্য তৈরি হয়েছে বাঁধানো চাতাল। তার আশপাশের জায়গাগুলিকে সবুজ ঘাসের চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ‘মাসির বাড়ি’তে দর্শনার্থীদের ভিড় সামলানোর জন্য ওই চত্বরটিতে বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাস্তা পাকা করে দেওয়া হয়েছে। এখানেই সমুদ্রের পাড়ে শোভা পাচ্ছে ‘জগন্নাথ ধাম’ লেখা বিশালাকার কাটআউট।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, আগামী ২৭ জুন মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থেকে সোনার ঝাঁটা হাতে রথযাত্রার সূচনা করবেন। ইতিমধ্যে পুরীর আদলে জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রার জন্য আলাদা তিনটি রথ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ওই দিন রথে চেপে মাসির বাড়ি যাবেন তাঁরা। ৫ জুলাই উল্টো রথে চড়ে মন্দিরে ফেরা। তবে পুরীর মন্দিরের রীতি মেনে শাস্ত্র মতে মাসির বাড়ি ফিরেই নিজেদের ঘরে ঢুকতে পারবেন না জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রা। কারণ, তাঁদের বাধা দেবেন দেবী লক্ষ্মী। ৬ এবং ৭ জুলাই রথে চেপেই ভক্তদের দর্শন দেবেন জগন্নাথ। তার পরের দিন মন্দিরের ভিতরে যাবেন তাঁরা।