• অভিনয় করতে দেওয়া হচ্ছে না, বন্ধ হতে পারে দোকানও! ভয় পেয়েই কি গিল্ড ছাড়লেন পরিচালক অয়ন?
    আনন্দবাজার | ০৯ জুন ২০২৫
  • ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া, সংক্ষেপে ডিএইআই-য়ের সদস্য তালিকা থেকে আরও একটি নাম সরে গেল। তিনি পরিচালক-অভিনেতা অয়ন সেনগুপ্ত। বাকি কয়েকজনের মতো পরিচালক গিল্ড ছাড়লেন তিনিও। সোমবার বিকেলে আলিপুরের আদালতে গিয়ে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে পরিচালকদের হাই কোর্টে দায়ের করা মামলা থেকেও নাম প্রত্যাহার করে নেন। গিল্ড ছাড়ার আগে বাকি পরিচালকদের মতো তিনিও জানিয়েছেন, চাপের মুখে নতিস্বীকার করে নয়, স্বেচ্ছায় তিনি গিল্ড ছাড়ছেন। কিন্তু, টলিউড যে বলছে অন্য কথা! নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা বিনোদন দুনিয়ার একাধিক ব্যক্তিত্বের অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে অয়নকে গিল্ড ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগের আঙুল সেই ফেডারেশনের দিকেই। সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল পরিচালকের সঙ্গে। তিনি ফোন ধরেননি।

    কখনও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে কাজ। কখনও হুমকি ফোন আসছে বাড়িতে! অভিযোগ, এ ভাবেই ভয় দেখিয়ে পরিচালকদের গিল্ড ছাড়তে বাধ্য করছে ফেডারেশন। একই ভাবে সংগঠনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে পরিচালকের দায়ের করা মামলা থেকেও নাকি সরিয়ে আনা হচ্ছে তাঁদের। এই অভিযোগ বেশ কিছু দিন ধরে টলিউডের অন্দরে। তারই বলি হলেন পরিচালক-অভিনেতা অয়ন, দাবি অনেকের।

    অয়ন পরিচালনার কাজ হারিয়েছেন দীর্ঘ দিন। কাজের অভাবে নিরুপায় পরিচালক রাস্তায় খাবারের দোকান দিতে বাধ্য হয়েছেন। দক্ষিণ কলকাতায় তপন থিয়েটারের সামনে ফুটপাথে তাঁর খাবারের দোকান যথেষ্ট পরিচিত। পাশাপাশি, গত এক মাসেরও বেশি সময় তিনি একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করছিলেন। সূত্রের দাবি, অজানা কারণে সম্প্রতি অভিনয়ের সুযোগও বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁর। দোকানে পৌঁছে গিয়েছিল এক দল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। সেই সময় অয়নের দোকান বন্ধ ছিল। অপরিচিতরা আশপাশের দোকানিদের থেকে পরিচালকের দোকান সম্বন্ধে খোঁজখবর নেয়। সে দিনই রাতে অয়নের স্ত্রীকে ফোন করে নাকি হুমকি দেওয়া হয়েছে, খাবারের দোকানও বন্ধ হয়ে গেলে সেনগুপ্ত পরিবার চলবে কী করে? স্ত্রী, সন্তান, সংসারের মুখ চেয়ে বাধ্য হয়ে অয়ন এর পরেই পরিচালক গিল্ড ছাড়েন বলে খবর।

    এতেও যদিও রেহাই নেই তাঁর। আলিপুর জজ কোর্টে গিয়ে ফেডারেশন সভাপতির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা থেকে নাম প্রতাহ্যারের পর তাঁকে দেখা করতে হবে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপের সঙ্গে। তিনি সন্তুষ্ট হলে আগামী দিনে কাজ পেতে আর কোনও সমস্যা নাও হতে পারে অয়নের। বাকি পরিচালকদের মতো তিনি হয়তো তখন পুরনো পরিচালক গিল্ডে যোগ দেবেন।

    এ ভাবে একের পর এক সদস্য বেরিয়ে গেলে ডিএইআই কি অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগবে? ব্যাহত হবে হাই কোর্টে চলতে থাকা পরিচালকদের মামলা?

    জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেন, সম্পাদক সুদেষ্ণা রায়ের সঙ্গে। তাঁরাও ফোনে অধরা। তবে এর আগে সংগঠনের দুই সদস্য ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী এবং বিদুলা ভট্টাচার্য আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন, সমস্ত টলিউড জানে কী থেকে কী হচ্ছে। তাঁরা তাই বিষয়টি নিয়ে একটুও চিন্তিত নন। অয়ন সেনগুপ্তও যে বাকিদের পথে হাঁটবেন, খবর ছিল তাঁদের কাছে। ফেডারেশন এবং তার সভাপতির বিরুদ্ধে পরিচালক-প্রযোজকদের ভয় দেখানো, কাজ কেড়ে নেওয়া বা শুটিং বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘকালীন। সত্যিই কি এ রকম কিছু ঘটছে? বরাবরের মতো এ প্রসঙ্গে এ বারেও নীরব স্বরূপ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)