পর্ন ভিডিও কাণ্ডে অভিযুক্তদের বাড়ির তল্লাশি করতে চায় পুলিশ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১০ জুন ২০২৫
হাওড়ায় দেহব্যবসা ও পর্ন ভিডিও কাণ্ডে এখনও পুলিশের হাতে ধরা পড়েননি পলাতক অভিযুক্ত মা ও ছেলে। তাঁদের বাড়ির সামনে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ইতিমধ্যেই জোগাড় করেছে পুলিশ। সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তাঁদের ফ্ল্যাটে কারা যাতায়াত করতেন তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জোগাড় করতে চান তদন্তকারীরা। এর পাশাপাশি তাঁদের ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজও জোগাড় করার চেষ্টা চলছে। ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানোর অনুমতি নিতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে পুলিশ। অনুমান, মা ও ছেলে বিদেশে গিয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন।
হাওড়ার বাঁকড়ার বাড়িতে এক তরুণীকে প্রায় পাঁচ মাস আটকে রেখে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে শ্বেতা খান ও তাঁর ছেলে আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতা তরুণী সোদপুরের বাসিন্দা। তাঁর বয়স ২৪ বছর। তরুণীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, ছবিতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মা ও ছেলে পর্ন ভিডিওর ব্যবসা চালাতেন। পাশাপাশি রিলস বানিয়ে মোটা টাকা আয় করতেন। সেই রিলসের মাধ্যমেই কাজের টোপ দিতেন শ্বেতা ও আরিয়ান। অনেককে এর মাধ্যমে দেহ ব্যবসাতেও নামানো হয়েছিল।
কয়েকমাস আগে আরিয়ানের সঙ্গে নির্যাতিতা তরুণীর সোশ্যাল মিডিয়া আলাপ হয়। আরিয়ানের ফাঁদে পা দিয়েই বাঁকড়ার বাড়িতে যান ওই তরুণী। এরপর তাঁকে দিয়ে পানশালায় কাজ করানো হয়। এমনকী মধুচক্র ও পর্নোগ্রাফির প্রস্তাবও দেওয়া হয়। তরুণী প্রতিবাদ করলে চলে অমানুষিক অত্যাচার। তাঁকে আটকে রেখে বাড়ির সব কাজ করানো হয়। পাশাপাশি তরুণীকে রড দিয়ে মারধর, শরীরে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা, মাথার চুল কেটে নেওয়ার মতোও অভিযোগ উঠেছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, একবার ওই তরুণীকে নিয়ে কুলু–মানালিতেও গিয়েছিলেন শ্বেতা ও আরিয়ান। কী কারণে তাঁকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। শুক্রবার বাঁকড়া থেকে কোনও রকমে পালিয়ে সোদপুরের বাড়িতে ফেরেন তরুণী। এরপর পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।
শনিবার ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট থেকে ওই তরুণীর অভিযোগ হাওড়া সিটি পুলিশের কাছে এসে পৌঁছায়। এরপরই তদন্তে নামে ডোমজুড় থানার পুলিশ। বাঁকড়ার ফকিরপাড়ায় অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালান তদন্তকারীরা। কিন্তু তাঁরা দেখেন, দরজায় তালা ঝুলছে। তারপর থেকে অভিযুক্তদেরও কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানোর অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের ধারণা, ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে। আরিয়ান ও শ্বেতার পরিবারের অন্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।