নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলার চাপড়া সীমান্ত থেকে বাজেয়াপ্ত হল ২১ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা। প্রতিবেশী দেশের মুদ্রার পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৩৪০ বোতল কাশির সিরাপ এবং ১১ কেজি গাঁজা। যদিও কোনও পাচারকারী বিএসএফের হাতে ধরা পড়েনি। বিএসএফের গোয়েন্দা বিভাগের অনুমান, বাংলাদেশি মুদ্রায় পাচার সামগ্রীর কেনাবেচা হচ্ছে।
রবিবার গভীর রাতে বিএসএফের ১৬১ ব্যাটেলিয়ন গোংরা বর্ডার আউট পোস্ট থেকে এই পাচার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ভারতের ভিতরে এই বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রা কী করে দুষ্কৃতীদের হাতে পৌঁছল? বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে গোয়েন্দারা। বাজেয়াপ্ত সামগ্রী স্থানীয় শুল্ক বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ আধিকারিক নীলোৎপল পান্ডে বলেন, বিএসএফের এ ধরনের তৎপরতা ভবিষ্যতে সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালানকারীদের দমন ও প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নেবে। সীমান্ত রক্ষায় বিএসএফ ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করছে। যার ফলে সীমান্ত সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা যাচ্ছে।
রবিবার গভীর রাতে বিএসএফের জওয়ানরা গোপন সূত্রে খবর পান, সীমান্তঘেঁষা একটি নির্জন এলাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে বড়সড় চোরাচালান হতে চলেছে। তাঁরা সতর্ক হয়ে ওঠেন এবং সীমান্ত সংলগ্ন একটি কলাবাগানে আত্মগোপন করে অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত গভীর হতেই সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে আসে। দেখা যায়, ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে কয়েকজন ব্যক্তি কলাবাগানের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে জওয়ানরা চারদিক থেকে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন এবং সন্দেহভাজনদের আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু, বিএসএফের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। রাতভর এলাকাজুড়ে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েও কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ চোরাই সামগ্রী উদ্ধার করে বিএসএফ। উদ্ধার হয়েছে ২১ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা, ৩৪০ বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ এবং ১১ কেজি গাঁজা। সমস্ত সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এতদিন ভারতের চোরাকারবারিরা দেশীয় টাকাতেই পাচার সামগ্রী লেনদেন করত। তবে বিএসএফের দাবি, বর্তমানে বাংলাদেশি মুদ্রায় সেই ডিল হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে সেই টাকা ভারতের পাচারকারীর হাতে এল, তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। মনে করা হচ্ছে, মানি এক্সচেঞ্জ বা হাওলার মাধ্যমে সেই টাকা ভারতের ঢুকেছে। অনুমান করা হচ্ছে, আগের কোনও পাচার সামগ্রী ভারতে চোরাই পথে ঢোকানো হয়েছিল। সেই টাকাই রবিবার রাতে দেওয়ার জন্য সীমান্তে হাজির হয়েছিল পাচারকারিরা। -নিজস্ব চিত্র