সংবাদদাতা, মানকর: কাঁকসার মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই স্টোর রুম। ফলে ক্লাস রুমেই মজুত করা রয়েছে মিড ডে মিলের চাল, ডালের বস্তা, সব্জি ও গ্যাসের সিলিন্ডার। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। তাঁদের অভিযোগ, এইভাবে ক্লাসে গ্যাস সিলিন্ডার মজুত রাখলে যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। অবিলম্বে ওই গ্যাস সিলিন্ডার সরানো হোক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিষ্ণুপুরের এই প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৫০। পড়াশোনায় নামও রয়েছে স্কুলের। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এখানে। কিন্তু ছ’টি শ্রেণির জন্য ছ’টি ক্লাস রুম থাকলেও আলাদা স্টোর রুম নেই। ফলে মিড ডে মিলের চাল, ডাল থেকে শুরু করে গ্যাস সবই রাখা হয় পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস রুমে। দেখা গেল, একদিকে বেঞ্চে বসে ক্লাস করছে পড়ুয়ারা। অন্যদিকে চাল, ডালের বস্তা। ব্ল্যাক বোর্ডের ঠিক পাশেই একদিকে ঝোলানো রয়েছে পাঠ্য বিষয়ের বিভিন্ন ছক, পশ্চিমবঙ্গের ম্যাপ। আর তার সামনে রয়েছে বাসনপত্র, জলের ড্রাম, হাঁড়ি, বালতি, প্রেসার কুকার সবই। বোর্ডের অন্য প্রান্তের নীচে রয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ মহাপুরুষদের নামে নামাঙ্কিত। যেমন সুভাষচন্দ্র বসু কক্ষ, স্বামী বিবেকানন্দ কক্ষ। কিন্তু ওই কক্ষ পঠন-পাঠনের জন্য ব্যবহৃত হওয়া দরকার। সেখানে এভাবে কেন মালপত্র রাখা হবে? অভিভাবকরা বলেন, ক্লাস রুমের মধ্যেই গ্যাস রাখা হচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কে নেবে? দ্রুত শ্রেণি কক্ষ বাড়ানো হোক। তাঁরা জানান, শুধু পঞ্চম শ্রেণি নয়, অন্য শ্রেণিতেও বসার উপযুক্ত জায়গা নেই। শো কেস, বই রাখার টেবিল, বাক্স সহ নানা জিনিসপত্র রয়েছে। ভাঙাচোরা জিনিসও ক্লাস রুমে রাখা হয়। শিশুরা খেলতে গিয়ে জখম হতে পারে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য শেড রয়েছে। কিন্তু সব পড়ুয়ার সেখানে জায়গা হয় না। ওখানে ৩০ জন বসতে পারে। বাধ্য হয়ে অনেকে পড়ুয়াকেই শেডের বাইরে বসতে হয়। রোদ, বৃষ্টিতে সমস্যা বাড়ে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাপি হাজরা জানান, আমাদের ছ’টি শ্রেণির জন্য ছ’টি কক্ষ আছে। অতিরিক্ত কোনও ঘর নেই। তাই শ্রেণি কক্ষেই সব রাখতে হয়। সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পড়াতে গিয়ে টিচিং-লার্নিং মেটেরিয়ালস ব্যবহার করতে পারি না। চালের ড্রাম থাকায় সমস্যা হয়। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানানো হয়েছে। পরিদর্শনও হয়েছে।-নিজস্ব চিত্র