সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: রঘুনাথপুর পুর-বোর্ডকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পুরসভায় প্রশাসক হিসেবে বসানো হয়েছে মহকুমা শাসককে। পুরবোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসানোকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপি কাউন্সিলার। আজ, মঙ্গলবার বিচারক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। প্রশাসককে হটিয়ে কাউন্সিলারদের মাধ্যমে আগামী দিন ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন হবে নাকি পুরসভায় আগামী দিন ‘অকাল’ নির্বাচন হতে চলেছে, তা নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে রঘুনাথপুর পুরসভার বোর্ডকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। প্রশাসক হিসেবে রঘুনাথপুর মহকুমা শাসক বিবেক পঙ্কজকে বসানো হয়। আগামী ছ’মাসের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন করার কথা জানানো হয়। পুরসভার বোর্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গত ২২ মে পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলার দীনেশ শুক্লা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
দীনেশবাবু বলেন, তৃণমূল কাউন্সিলারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেই সমস্ত কাউন্সিলারের পাপের বোঝা আমরা কেন ভোগ করব? ওয়ার্ডের বাসিন্দারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। পাঁচ বছর তাঁদের পরিষেবা তুলে দেওয়া আমার কাজ। কিন্তু, পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়ায় ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ভুগতে হচ্ছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে আইনিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। তাই হাইকোর্টে মামলা করেছি।
প্রাক্তন চেয়ারম্যান তরণী বাউরির বিরুদ্ধে নানা কাজে অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ২৪ এপ্রিল অনাস্থা আনা হয়েছিল। পুরসভার ১৩ জন কাউন্সিলারের মধ্যে শাসক দলের ছ’জন এবং কংগ্রেসের একজন কাউন্সিলার অনাস্থা আনেন। পুর আইন অনুযায়ী পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান কেউ অনাস্থা প্রস্তাব সভা ডাকেননি। তাই পরবর্তী সময়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনা তিনজন কাউন্সিলার নিয়ম অনুযায়ী তলবি সভা ডাকেন। সেই তলবি সভার একদিন আগে পুর বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়। তারই বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয়েছে।
রঘুনাথপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি তারকনাথ পরামানিক বলেন, প্রশাসন এতদিন জানার পরেও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কাউন্সিলারদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কেন? কয়েকজন দুর্নীতি করেছে বলে সমস্ত বোর্ড ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আমরা সংবিধান বিরোধী বলে মনে করি। যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তাদের কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।
অনাস্থা প্রস্তাব আনা কাউন্সিলারদের মধ্যে প্রণব দেওঘরিয়া, মৃত্যুঞ্জয় পরামানিক বলেন, আপাতত পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি। জেলা সভাপতি যেমন নির্দেশ দেবেন, সেই মতো কাজ করব।