এই সময়, ডায়মন্ড হারবার: সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার এগজ়িকিউটিভে প্রথম স্থানাধিকারী প্রিয়তোষ পিপলাইকে শুভেচ্ছা জানালেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রিয়তোষের বিদ্যাসাগরপল্লির বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছাবার্তা ও উপহার তুলে দেন সাংসদের প্রতিনিধিরা।
শুভেচ্ছা জানাতে হাজির ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক পান্নালাল হালদার, দলীয় পর্যবেক্ষক শামিম আহমেদ, পুরসভার চেয়ারম্যান প্রণব দাস, ভাইস চেয়ারম্যান রাজর্ষি দাস প্রমুখ।
শামিম আহমেদ বলেন, ‘প্রিয়তোষের জন্য আমরা গর্বিত। তিনি এলাকার মুখ উজ্জ্বল করেছেন।’ প্রিয়তোষের এই সাফল্যে খুশির হাওয়া গোটা এলাকাজুড়ে। প্রথম হওয়ার খবর শুনে শুভেচ্ছা জানাতে আত্মীয়, প্রতিবেশী ও বন্ধুরা ভিড় জমাচ্ছেন বাড়িতে।
ভাড়া বাড়িতেই থাকেন বছর উনত্রিশের প্রিয়তোষ। বাবা তপন পিপলাই মারা যাওয়ার পর পরিবারে চরম অর্থাভাব শুরু হয়। পাঁচ বছরের প্রিয়তোষকে নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে পা রাখেন মা মৌসুমি। নিজে ছাত্র পড়িয়ে সংসার চালাতে শুরু করেন।
ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত প্রিয়তোষ সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষামন্দির থেকে মাধ্যমিক ও বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৭ সালে কাজে যোগ দেন।
২০২১ সালে ডব্লিউবিসিএস দিয়ে গ্রুপ সি-তে জায়গা করে নেন প্রিয়তোষ। ২০২৪ সালে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার হিসেবে বেলেঘাটায় পোস্টিং পান। ২০২২ সালে ফের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেন।
সম্প্রতি তার ফল প্রকাশিত হলে জানা যায় এগজ়িকিউটিভে প্রথম হয়েছেন প্রিয়তোষ। এ দিন তিনি বলেন, ‘এত ভালো ফল হবে ভাবিনি। আমার এই সাফল্যে মায়ের অবদান সব থেকে বেশি।’
মৌসুমি বলেন, ‘ওর বাবার মৃত্যুর পর দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে ছেলেটাকে ভীষণ কষ্ট করে বড় করেছি। নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ছেলেটা পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। ছেলে যে এত ভালো ফল করবে ভাবিনি।’ পড়াশোনার চাপ সামলে নিয়ম করে গান শোনা, সিনেমা দেখা, গল্পের বই পড়া পছন্দ করেন প্রিয়তোষ।