একটি পঞ্চায়েতে থেকেই ৩৫০০ জাল জন্ম শংসাপত্র! সুন্দরবনে গ্রেপ্তার এক অস্থায়ী পঞ্চায়েতকর্মী...
আজকাল | ১০ জুন ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: টাকার বিনিময়ে দেদার জাল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি হচ্ছে সুন্দরবনে। একটি, দু’টি কিংবা দশটি নয় একসঙ্গে ৩৫০০ জাল শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছে সুন্দরবনের একটি মাত্র পঞ্চায়েত থেকেই। অভিযোগ পেয়েই মূল অভিযুক্ত এক অস্থায়ী পঞ্চায়েতকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুরু করা হয়েছে তদন্ত।
সূত্রের খবর, সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের পাঠানখালি পঞ্চায়েতের চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন গৌতম সর্দার নামে এক যুবক। টাকার বিনিময়ে দিনের পর দিন পঞ্চায়েত থেকে জাল জন্ম শংসাপত্র তৈরির কারবার ফেঁদে বসেছিলেন। দিব্যি চলছিল জাল ব্যবসা। ঘটনাটি ধীরে ধীরে নজরে আসে। গত ২৩ এপ্রিল পাঠানখালি পঞ্চায়েতের তরফে গোসাবা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পঞ্চায়েতের চুক্তিভিত্তিক কর্মী বটতলির বাসিন্দা গৌতমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
যদিও পঞ্চায়েত প্রধান দাবি করেছেন তিনি জাল শংসাপত্রের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। পঞ্চায়েত প্রধান সুচিত্রা ভূঁইয়া জানিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানা থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন যে, তাঁর দপ্তরে বসে জাল জন্ম শংসাপত্র ইস্যু করেছে পঞ্চায়েতের চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মী গৌতম। এরপর ঘটনার সামনে আসতেই গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে গত ২৩ এপ্রিল গোসাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এবং তিনি এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার জাল শংসাপত্র তৈরি করেছেন।
গৌতম পঞ্চায়েতের দপ্তরে বসে এভাবে দিনের পর দিন দুর্নীতি করে জাল জন্ম শংসাপত্র তৈরি করতেন। আর সেই জন্ম সার্টিফিকেট দিয়ে তৈরি হতো পাসপোর্ট। গৌতমের কীর্তি সম্পর্কে পরিবারের লোকেরা কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন দাদা গোবিন্দ সর্দার।
সুত্রের খবর, পাসপোর্ট জালিয়াতির ঘটনায় গার্ডেনরিচ, একবালপুর, ভবানীপুর থানা এলাকা থেকে যে ক’জন গ্রেপ্তার হয়েছে প্রত্যেকের সঙ্গে গৌতমের যোগসুত্র রয়েছে। বর্তমানে গৌতম কলকাতা পুলিশের তদন্তের আওতায় রয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এর সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে? গোটা ঘটনার তদন্ত করছে তদন্তকারী অফিসাররা।
উল্লেখ্য সুন্দরবনের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী লাগোয়া এলাকা গোসাবা ব্লক। আর এই ব্লকের পাঠানখালি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৈরি হতো জাল জন্ম শংসাপত্র। চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। তবে পুলিশের তদন্তে আর কারা যুক্ত তাঁদের নাম সামনে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।