এই সময়: তিন সপ্তাহে রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ-র। সেখানে বছর ঘুরে গেলেও উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিটে খুন ও গোলমালের ঘটনায় রিপোর্ট পায়নি হাইকোর্ট।
সোমবার সেই রিপোর্ট তলব করলে ফের এনআইএ সময় চাওয়ায় তদন্তকারী অফিসারকে তোপের মুখে পড়তে হলো আদালতের। তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ রিপোর্ট দেওয়ার জন্যে সময় বেঁধে শেষ সুযোগ দিয়েছে এনআইএ-কে।
ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, তদন্তকারী অফিসার কি মনে করছেন যে হাইকোর্ট তাঁর কিছু করতে পারবে না? তা হলে তিনি ভুল করছেন। তিনি যা করেছেন, তা আদালত অবমাননার সামিল বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি চক্রবর্তী।
আদালতের নির্দেশ, ৯ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে হাইকোর্টে। না হলে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে ২০১৮–র সেপ্টেম্বরে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিটে তুমুল গন্ডগোল হয়। পুলিশ গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে স্থানীয় দুই যুবক নিহত হন বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ তা স্বীকার করেনি। হাইকোর্টে মামলা হয়।
এ দিন হাইকোর্টে নিহত দুই যুবকের পরিবারের আইনজীবী পার্থ ঘোষ বলেন, গুলিতে দুই যুবকের খুনে পুলিশ অভিযুক্ত থাকায় সঠিক তদন্ত হচ্ছে না বলেই হাইকোর্ট এনআইএ–কে তদন্তভার দিয়েছিল।
পরিবারের দাবি মেনে সিঙ্গল বেঞ্চ ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণেরও নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সরকার মাত্র দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে চায়। পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে রাজ্য সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গত বছর ৩ এপ্রিল নির্দেশ দেয়, তিন সপ্তাহের মধ্যে এনআইএ-কে তদন্ত সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। কিন্তু সেই রিপোর্ট এতদিনেও দেওয়া হয়নি।
এনআইএ-র পক্ষে আইনজীবী অরুণকুমার মাইতি রিপোর্ট পেশের জন্যে আরও সময় চাইলে তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। এনআইএ–র আইনজীবী বলেন, গোটা তদন্তের যাবতীয় নথি একত্রিত করে রিপোর্ট আকারে জমা দেওয়ার জন্যে তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হোক।
যা শুনে বিচারপতি চক্রবর্তীর ক্ষোভ, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ সত্ত্বেও এক বছরের উপরে হয়ে গেলেও এখনও রিপোর্ট পেশে কেন সময় চাওয়া হবে? তদন্তকারী অফিসার কী করছেন?