জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া চিপস কান্ডে শেষমেষ গ্রেফতার সিভিক ভলেন্টিয়ার! গ্রেফতার অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিত। ছাত্রের আত্মহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।খুন ও আত্মহত্যায় বাধ্য করা এমন 2 জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার বলে জানা গেছে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৮ই মে। অভিযোগ, একটি দোকান থেকে চিপস কিনতে গিয়ে এক স্কুল পড়ুয়াকে শাসানো ও ভয় দেখানো হয়। অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার তথা দোকানের মালিক শুভঙ্কর দীক্ষিতের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলে ওই ছাত্রের পরিবার।
চরম আতঙ্কে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ছাত্রটি। প্রথমে তাকে ভর্তি করা হয় পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে, পরে স্থানান্তর করা হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। ২২শে মে ছাত্রটির মৃত্যু হয়। ২৫শে মে পাঁশকুড়া থানায় দায়ের হয় লিখিত অভিযোগ। নাম থাকে সিভিক ভলেন্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিত সহ তাঁর পরিবারের আরও চারজন সদস্যের।
অবশেষে ঘটনার ১৮ দিন পর, ৮ই জুন রাতে জিঁয়াদা এলাকা থেকে শুভঙ্কর দীক্ষিতকে গ্রেফতার করে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। পরদিন, সোমবার তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
তবে এতে সন্তুষ্ট নন ছাত্রের পরিবার। গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও সিভিক কে আড়াল করছে পুলিশ। তাদের দাবি, অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারকে দিতে হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
সেদিনের ঘটনা
উল্ল্যখ্য, আত্মঘাতী কিশোর কৃষ্ণেন্দু বাজারে কুরকুরে চিপস কিনতে বেরিয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ, যে দোকানে গিয়েছিল, সেখানে দোকান খোলা রেখে দোকানদার চলে গিয়েছিলেন। দোকানে ছিলেন না। তখন দোকানের বাইরে পড়ে থাকা একটি চিপসের প্যাকেট কুড়িয়ে নেয় কৃষ্ণেন্দু। তার কাছে পয়সাও ছিল, পরে এসে সে দোকান মালিক শুভঙ্কর দীক্ষিতকে দেবে ভেবেছিল। এরপর বাড়ি ফেরার পথেই দোকান মালিক শুভঙ্কর দীক্ষিত, যিনি পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ারও, তাঁর দোকানের চিপস 'চুরি' করে নিয়ে চলে যাচ্ছে বলে কৃষ্ণেন্দুকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন।
মিথ্যে চুরির অপবাদ-অপমান
অভিযোগ, শুভঙ্কর দীক্ষিত এরপর ওই কিশোরকে প্রকাশ্যেই চুরির অপবাদ দেন। কান ধরে ওঠবস করান। এমনকি মারধরও করেন। কৃষ্ণেন্দুর বাবা-মায়ের দাবি, চিপসের দাম সেইসময় তাঁদের ছেলে পরিশোধও করে দিয়েছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কৃষ্ণেন্দুর মা। অপমানিত অবস্থায় ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যান মা।
অপমানে আত্মঘাতী কিশোর কৃষ্ণেন্দু
কিন্তু চোর অপবাদ আর অপমান সহ্য করতে না পেরে এরপরই কৃষ্ণেন্দু মাকে চিঠি লিখে রেখে বাড়িতে থাকা কীটনাশক খেয়ে নেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় তমলুক মেডিকেল কলেজে। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে আজ সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।