পরপুরুষের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক রয়েছে, এমন সন্দেহ করতেন স্বামী। বাদ যায়নি বেয়াই, জামাইরাও। সেই সন্দেহের বশেই স্ত্রীর গলার নলি কেটে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। নিজের বাড়ির ছাদের টালি খুলে ঘরে ঢুকে খুনের অভিযোগ। উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর থানা এলাকার হালিশহরের ঘটনা। অভিযুক্ত উজ্জ্বল মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হালিশহর ভূতবাগান নতুনপল্লির বাসিন্দা উজ্জ্বল মণ্ডল। তাঁর স্ত্রীর নাম জ্যোৎস্না মণ্ডল। তাঁদের ছোট মেয়ে কোয়েল মণ্ডল জানান, সকালে তাঁর দাদা ফোন করে তাকে জানায়, মাকে খুন করেছে বাবা। মেয়ের দাবি, বাবা মায়ের মধ্যে একেবারেই বনিবনা ছিল না। বাবা মাকে পছন্দ করতেন না। সব সময় সন্দেহ করতেন।
কোয়েলের দাবি, বেয়াই থেকে জামাই, সকলের সঙ্গেই মায়ের সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতেন তাঁর বাবা। খুবই সন্দেহবাতিক তাঁর। ‘বাবা হয়ে আমাদের জন্য কিছুই করেনি। উল্টে আমাদের মাকে খুন করে ফেলল। ওই লোকের ফাঁসি হোক, আমরা সেটাই চাই’, বলেন কোয়েল।
সোমবার রাতে ঘরে শুয়েছিলেন জ্যোৎস্না। দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল। অভিযোগ, নিজের ঘরেই টালি খুলে ঢোকেন উজ্জ্বল। স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করেন। উজ্জ্বলের ছেলের বৌ পূজা মণ্ডল প্রথম শাশুড়িকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
পূজার কথায়, ‘আমার শ্বশুর সব সময়েই শাশুড়িকে অত্যাচার করতেন। আর শ্বশুরের দিদি মদত দিতেন। শাশুড়িকে খুব সন্দেহ করতেন। অথচ একেবারেই শাশুড়ি এমন নন। আজ ঘরের টালি খোলা দেখে প্রথমে ভাবি, ঘরে চোর ঢুকেছে। তার পরে ঘরের দরজা ঠেলে ঢুকে দেখি এই অবস্থা।’
পূজা জানান, এর আগেও কালীপুজোর সময়ে শাশুড়িকে মেরেছিলেন উজ্জ্বল। উজ্জ্বলের নামে থানায় অভিযোগও রয়েছে। এলাকার লোকজনও জানান, প্রায়শই স্ত্রীকে মারধর করতেন উজ্জ্বল। মানসিক নির্যাতনও করতেন। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে যায় বীজপুর থানার পুলিশ।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিক গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘খুনের অভিযোগে উজ্জ্বল মণ্ডলকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। কী ভাবে কী ঘটেছে আমরা পুনর্নির্মাণ করব।’ মেয়ের এই পরিণতির খবর পেয়ে এসে পৌঁছন জ্যোৎস্নার মা ডলি চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এ তো গলা কাটা নয়, যেন কচু কাটা করেছে। আমরা ফাঁসি চাই উজ্জ্বলের। আমার একটাই মেয়ে। আমার আর কেউ নেই।’