• খোয়াক্ষীর পৌঁছল জেলায়, গজা-পেঁড়া তৈরিতে টেন্ডার প্রশাসনের, কবে মিলবে মহাপ্রসাদ?
    এই সময় | ১১ জুন ২০২৫
  • ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় পৌঁছতে শুরু করেছে দিঘার জগন্নাথদেবের সামনে নিবেদন করা খোয়াক্ষীর। ‘কোল্ড চেনে’-র মাধ্যমে (পচনশীল খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ রপ্তানি করার বিশেষ পদ্ধতি)  পৌঁছেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। আপাতত তা রাখা হয়েছে সার্কিট হাউসের রেফ্রিজারেটরে। এ বার এই খোয়াক্ষীর থেকেই তৈরি হবে মহাপ্রসাদ। সেই প্রসাদ তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। কোনও কোনও জায়গায় আজ-কালের মধ্যেই ওপেন টেন্ডার ডাকা হবে। স্থানীয় দোকানই এই খোয়াক্ষীর নিয়ে মিষ্টি বানানে।

    ‘কোল্ডচেন’ পদ্ধতিতে নির্ধারিত নিয়ম মেনেই জেলায় এসে পৌঁছেছে খোয়াক্ষীর। স্বাস্থ্য দপ্তর ও খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের তদারকিতে ওই মহাপ্রসাদ রাখা হয়েছে মেদিনীপুর শহরের সার্কিট হাউসের একটি রেফ্রিজারেটরে। যার তাপমাত্রা জ়িরো ডিগ্রির থেকেও কম।

    আপাতত এই মহাপ্রসাদ রেফ্রিজারেটরেই বাক্সবন্দি থাকবে। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে ব্লক প্রশাসনকে মিষ্টি তৈরির টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর। তার পরে তা বিডিও এবং ফুড ইন্সপেক্টরদের তদারকিতে পৌঁছে যাবে ব্লকের বরাত প্রাপ্ত মিষ্টি দোকানগুলিতে। সেখানে তৈরি হবে নির্দিষ্ট আকারের পেঁড়া ও গজা। তার পরে তা প্যাকেট হয়ে পৌঁছে যাবে রেশন দোকানগুলিতে।

    জেলা ও ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি প্যাকেটে থাকবে ৪.৮ সেন্টিমিটারের একটি পেঁড়া। যার ওজন হবে প্রায় ২০ গ্রাম। এ ছাড়াও সেই বাক্সে থাকবে ৬০ গ্রাম ওজনের একটি খাজা। প্রতিটি বাক্সে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের একটি ছবিও থাকবে। সেই প্যাকেট ব্লকের ফুড ইন্সপেক্টরদের তদারকিতে পৌঁছবে বিভিন্ন রেশন দোকানে। সেখান থেকে ভক্তরা তা সংগ্রহ করবেন। পাশাপাশি যে সব জায়গায় দুয়ারে রেশন পরিষেবা দেওয়া হয়, সেই সব পয়েন্ট থেকেও ভক্তরা তা নিতে পারবেন।

    ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, মিষ্টি তৈরির ওপেন টেন্ডার হচ্ছে। ১৫ জুনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। গ্রামপঞ্চায়েত ভিত্তিক বিভিন্ন মিষ্টির দোকানগুলিও এই টেন্ডারের জন্য আবেদন করুক, চায় ব্লক প্রশাসন। এতে প্রত্যন্ত এলাকার রেশন দোকানেও মহাপ্রসাদ (পেঁড়া ও গজা) পৌঁছে দেওয়া সুবিধাজনক হবে।

    সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মহাপ্রসাদ পৌঁছোনোর পরেই জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরির নেতৃত্বে অতিরিক্ত জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক, উপমুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক, ফুড সেফটি অফিসার এবং বিডিওদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই বিডিওদের প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা দিয়ে দেওয়া হয়।

    জেলা ও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের অনুমান, মিষ্টি তৈরির কাজ ১৬-১৭ জুন থেকেই শুরু হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে ২৭ জুন, রথযাত্রার আগেই বাড়িতে বাড়িতে ‘মহাপ্রসাদ’ পৌঁছে দেওয়ার কাজ খুব একটা কঠিন হবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।

    এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সন্দীপ টুডু বলেন, ‘রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনেই সব কিছু করা হচ্ছে।’ তবে এত দিন খোয়াক্ষীর রাখা থাকলে, তা ঠিক থাকবে কি না, তা নিয়েও অনেকের মনে প্রশ্ন। এ বিষয়ে জেলার জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক (৩) সুদীপ মণ্ডল বলেন, ‘সাব জিরো টেম্পারেচরে (শূন্য ডিগ্রির থেকে কম তাপমাত্রায়) ওই খোয়াক্ষীর রাখা হয়েছে। ভয় পাওয়ার কোনও কারণই নেই।’ রাজ্য মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সহকারী সম্পাদক তথা জেলা সংগঠনের সম্পাদক সুকুমার দে-এর কথায়, ‘সঠিক নিয়ম মেনে খোয়াক্ষীর রাখা হলে তা ১৫ দিন অবধি ভালো থাকবে। আর মহাপ্রসাদ থেকে যে ভাবে পেঁড়া ও গজা তৈরির কথা বলা হয়েছে, তাতে ভয় পাওয়ার কোনও কারণই নেই।’

  • Link to this news (এই সময়)