• ২৪৯ বছরের প্রাচীন মহিষাদলে হয় না স্নানযাত্রা, এর পিছনে কী কারণ রয়েছে জানেন?
    এই সময় | ১১ জুন ২০২৫
  • প্রাচীন রথযাত্রা হিসেবে পুরী ও মাহেশের পরেই নাম রয়েছে মহিষাদলের। তবে এ বার সেই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে দিঘা। পুরী ও মাহেশের পাশাপাশি এ বার দিঘাতেও রথের আগে ধুমধাম করে পালিত হবে প্রভু জগন্নাথের স্নানযাত্রা। তবে ২৯৪ বছরের পুরোনো মহিষাদলে স্নানযাত্রার উৎসব পালন করা হয় না। কিন্তু ধুমধাম করে সেখানে রথযাত্রার উৎসব পালিত হয়। মহিষাদলে কেন হয় না স্নানযাত্রা? কী ভাবে সেখানে পালিত হয় রথযাত্রার উৎসব?

    কেন মহিষাদলে স্নানযাত্রা হয় না?

    পূর্ণিমা তিথিতে সব জায়গাতেই রথযাত্রার আগে জগন্নাথের স্নানযাত্রার উৎসব পালিত হয়। কিন্ত প্রাচীন মহিষাদলে রথযাত্রা পালন না করার কারণ জানালেন সেখানকার রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ। তিনি বলেন, ‘অন্য জায়গায় রথে অধিষ্ঠিত দেবতা হিসেবে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা থাকেন। কিন্তু আমাদের রথে কুলদেবতা হিসেবে গোপাল অধিষ্ঠিত দেবতা হিসাবে প্রাধান্য পান। তাঁর সঙ্গে যান শুধু জগন্নাথ। তাই আমাদের স্নানযাত্রা হয় না।’

    কী ভাবে সেখানে পালিত হয় রথযাত্রা?

    স্নানযাত্রা না হলেও রথযাত্রার আগের দিন মহিষাদলে অনুষ্ঠিত হয় রথের দড়ির বাঁধন প্রক্রিয়া। রাজ পরিবারের সদস্য রথের দড়ি বেঁধে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন। রথ টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য চারটি দড়ি থাকে। এর মধ্যে একটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। এর পরে রথযাত্রার দিন রাজা হরপ্রসাদ গর্গ রাজবাড়ি থেকে পালকিতে চড়ে আসেন মহিষাদলের শহিদ বেদীতে। তিনি মহিষাদল রাজপরিবারের বর্তমান সদস্য। তিনিই রীতি মেনে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান পালনের পর প্রথা মেনে রথের রশিতে হাত ছোঁয়ান। তার পরে পুণ্যার্থীরা রথ টানা শুরু করেন।

    মহিষাদলের শহিদ বেদী থেকে রথ যায় গুন্ডিচাবাটি পর্যন্ত। অতিক্রম করে দেড় কিলোমিটার পথ। রথযাত্রা উপলক্ষে গুন্ডিচাবাটিতে বিশাল মেলা বসে। রাজ পরিবারের সদস্যরা সারা বছর এই রথ দেখভালের দায়িত্বে থাকেন। বর্তমানে রথ উৎসবের দিনগুলিতে মেলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমস্ত খরচ বহন করে স্থানীয় মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা। এখন শিল্পীরা সকলেই রথের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। এ বারে নতুন ছটি চাকা ও একটি সারথি তৈরির কাজ চলছে।

  • Link to this news (এই সময়)