অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: শ্বেতা খান ওরফে মহসিনা বেগম ওরফে ফুলটুসি ও তার ছেলে আরিয়ান ভিনরাজ্যে পালিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান পুলিশের। কারণ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে একটা সময় ফুলটুসি কাজের জন্য মুম্বইতে থাকত। তার অসাধু ব্যবসায় ভিনরাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নিয়মিত। সেই সুবাদেই ভিনরাজ্যে তার পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। এজন্য তদন্তকারীরা দল গঠন করছেন। প্রয়োজনে ফুলটুসিকে ধরতে ভিনরাজ্যেও পাড়ি দিতে পারে পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনার তদন্ত করতে মঙ্গলবার সকালে বাঁকড়ার ফকিরপাড়ায় আরিয়ানদের ফ্ল্যাটে যান বাঁকড়া ফাঁড়ি ও ডোমজুড় থানার তদন্তকারীরা। ফকিরপাড়ায় ফ্ল্যাটের পিছনের ঝোপ থেকে তরুণীর চুলের কাটা অংশ উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। ওই চুলের কাটা অংশ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। কারণ সোদপুরের তরুণী অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে মারধর করে তাঁর চুল কেটে নেয় ফুলটুসি। তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান, ফুলটুসির ফ্ল্যাটের পিছন থেকে পাওয়া ওই কাটা চুলের অংশ সোদপুরের তরুণীর। এদিন ঘটনার তথ্যপ্রমাণ হিসেবে চুলের এই অংশ সংগ্রহ করে রাখে পুলিশ। সকালে চুলের অংশ সংগ্রহ করার পাশাপাশি এদিন দুপুরে বাঁকড়া ফাঁড়ি ও ডোমজুড় থানার তদন্তকারীরা আশপাশে থাকা ফুলটুসকির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এদিন দুপুরে দফায় দফায় বাঁকড়া ফাঁড়িতে ডেকে ফুলটুসির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বাঁকড়া ফাঁড়িতে বসিয়ে রেখে পরিবারের অনেক সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলে। ফুলটুসকি ও তার ছেলে ঠিক কী করত? বর্তমানে কোথায় তারা পালিয়েছে তা দফায়-দফায় জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করে পুলিশ। প্রসঙ্গত, ফকিরপাড়ায় ফুলটুসকির ফ্ল্যাটের আশপাশেই তার বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি। সেখান থেকেই তার পরিবারের সদস্যদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়।
অন্যদিকে এদিন সকালেই সোদপুরের ওই তরুণীকেও ফের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তরুণী এদিন প্রেমে পড়ে যাওয়া ফুলটুসির ছেলে আরিয়ানকে ‘ক্লিন চিট’ দেন। ওই তরুণী পুলিশকে জানান, আরিয়ান তার কোনও ক্ষতি করেনি। আরিয়ানের মা ফুলটুসিই তার উপর যাবতীয় অত্যাচার করেছে। এদিকে এদিন ফুলটুসির ফ্ল্যাটে তল্লাশির জন্য হাওড়া আদালতে আবেদন করে পুলিশ। এই পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে মঙ্গলবার হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বললেন, “তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে ফুলটুসকির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তাদের নেতৃত্বে তদন্ত চলছে।”