সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: রেকর্ড পরিমাণ ধান সংগ্রহ শিলিগুড়িতে। মাত্র ছ’মাসে মহকুমায় সহায়কমূল্যে ধান সংগ্রহের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৭৮৪ মেট্রিক টন। যা টার্গেটের ৯৬ শতাংশ। এজন্য রাজ্যে শিলিগুড়ি মহকুমার স্থান তৃতীয়। চলতি মাসেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের প্রত্যাশা। তা হলেও জেলার রেশনের চাল জোগান করতে প্রতিবেশী জেলার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এজন্য জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে খবর।
সরকারিভাবে অক্টোবর মাস থেকে সহায়কমূল্যে ধান খরিদের মরশুমের সূচনা হয়। তা সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চলার কথা। কিন্তু জমি থেকে ধান দেরিতে ওঠায় এখানে ক্রয় শুরু হয়েছে নভেম্বর মাসে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এবার মহকুমায় ধান কেনার টার্গেট ১ লক্ষ ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। ১ নভেম্বর থেকে সাতটি কেন্দ্রীয় এবং তিনটি ভ্রাম্যমাণ ক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে ধান কেনা হচ্ছে। তাতে ধানের সহায়কমূল্য ২৩২০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। এরবাইরে ১২টি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, ১৩টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও ১৭টি কৃষি সমবায় সমিতি ধান কিনছে। এরা ধান কিনেছে ২৩শো টাকা কুইন্টাল দরে। সবমিলিয়ে মহকুমায় এখন পর্যন্ত ধান খরিদের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৭৮৪ মেট্রিক টন। যা টার্গেটের ৯৬.৪ শতাংশ। এতে ধান দিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ চাষি।
জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের এক কর্তা বলেন, সাত মাসে সংগৃহীত ধানের মধ্যে কেন্দ্রীয় ক্রয় কেন্দ্র এবং ভ্রাম্যমাণ ক্রয় কেন্দ্রে খরিদের পরিমাণ ৫০ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। এরবাইরে সমবায়, মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী, এপিসি মিলে কিনেছে বাকি ৪৯ হাজার ৩৮৪ এমটি। ধান খরিদের মরশুম শেষ হতে এখনও চার মাস বাকি।
দার্জিলিং জেলা খাদ্য নিয়ামক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, সহায়কমূল্যে ধান খরিদে রাজ্যে শিলিগুড়ি মহকুমার স্থান তৃতীয়। সকলের সহযোগিতায় এটা সম্ভব হয়েছে। চলতি মাসেই টার্গেট পূরণ হবে বলে আশা করছি।
মহকুমায় ধান খরিদের অগ্রগতি সন্তোষজনক হলেও জেলার রেশন ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় চাল জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলায় রেশন দোকানের সংখ্যা ৬৩১টি। তাতে গ্রাহকের সংখ্যা ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার। মাসে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের জন্য চালের প্রয়োজন প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন। এক বছরে রেশনে চালের প্রয়োজন প্রায় ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে সংগৃহীত ধান থেকে চাল উৎপাদন হবে প্রায় ৬৬ হাজার ৮৫৫ মেট্রিক টন। তা দিয়ে আট মাস রেশন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। তাছাড়া এখানে রেশনে দু’ধরনের চাল দরকার, সেদ্ধ ও আতপ। সমতলে সেদ্ধ চালের চাহিদা বেশি। সংগৃহীত ধান থেকে সেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। এজন্য মালদহ এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে সেই চাল সংগ্রহ করা হয়।