তৃণমূল কাউন্সিলারদের দ্বন্দ্বে পুরসভা এলাকায় সাফাই বন্ধ
বর্তমান | ১১ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি কৃষ্ণনগর: কৃষ্ণনগর পুরসভায় তৃণমূলের দলীয় কোন্দলে ব্যহত হচ্ছে শহরের সাফাইয়ের কাজ। যে ঠিকাদারি সংস্থার লোকজন শহরের প্রধান রাস্তা থেকে ময়লা আবর্জনা তুলত, তাঁরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে শহরের রাস্তার মধ্যে আবর্জনার পাহাড় জমছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। জানা গিয়েছে, ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা গত দু’মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলারদের মতানৈক্য ও বিবাদের জেরেই কার্যত থমকে গিয়েছে সাফাইয়ের কাজ। দীর্ঘদিন ধরে পুরসভার বোর্ড অব কাউন্সিলের বৈঠক হচ্ছে না। সে জন্য পুর পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এই সমস্যার সমাধান সূত্র বের হয় কিনা সেটাই দেখার।
কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন রীতা দাস বলেন, যে ঠিকাদার সংস্থা লোকজন শহরের মূল রাস্তাগুলির আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করত, তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ সেই কর্মীরা গত দু’মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কিছু কাউন্সিলর শহরের সাফাইয়ের কাজে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করছে। আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চাইছি।
শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এরই মধ্যে জঞ্জাল জমে ভয়াবহ অকার নিয়েছে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মূল গেটের সামনে ডাস্টবিন উপচে পড়ছে। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির সামনেও একই দৃশ্য। নিত্যদিনের আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এনিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কৃষ্ণনগর পুরসভার স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৩৫০জন সাফাই কর্মী রয়েছেন। যাঁরা শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আবর্জনা সংগ্রহের কাজ করেন। তবে সাফাইয়ের কাজে গতি আনতে বিগত বছরে কৃষ্ণনগর পুরসভার তরফ থেকে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল। যারা সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত শহরের মূল রাস্তায় আবর্জনা সংগ্রহের কাজ করত। সেই সংস্থায় ৮৮ জন কর্মী আছেন।
তবে পুরসভার জটিলতার কারণে বোর্ড অব কাউন্সিলের বৈঠক না হওয়ায় সাফাইকর্মীদের বেতন আটকে গিয়েছে। সমস্য না মেটা পর্যন্ত বিল পেমেন্ট সহ বিভিন্ন কাজ বাস্তবায়ন করা নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ। তাই দ্রুত সমাধান সূত্র না বেরলে পুরসভার নিজস্ব সাফাই কর্মীরাও কাজ বন্ধ করা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ। শহরবাসীর প্রশ্ন, রাজনৈতিক কোন্দলের শিকার হতে হচ্ছে শহরের নাগরিকদের। শহরকে আবার আগের মতো পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য করে তুলতে দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছাই এখন একমাত্র উপায়। তৃণমূল কাউন্সিলরদের দ্বন্দ্বে পুরসভার অন্যান্য কাজও আটকে রয়েছে।
কৃষ্ণনগর পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলার শান্তশ্রী সাহা বলেন, সাফাইয়ের কাজের ক্ষেত্রে আমাদের দাবি ছিল যে কোথায় কতজন কর্মী কাজ করছে তা যেন জানানো হয়। কিন্তু, পুরসভার পক্ষ থেকে তা জানানো হয়নি। তিনটি শিফটে কাজ হয়, কিন্তু কারা কাজ করে আমরা কিছুই জানি না।
পুরসভার চেয়ারপার্সন তৃণমূল কাউন্সিলার তথা আইএনটিটিইউসির শহর সভাপতি সৌগত কৃষ্ণদেব বলেন, আমরা ঠিকাদার নেব না। আমাদের শহরে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদেরকেই যেন কাজ দেওয়া হয়।