পিয়ারডোবায় ট্রাকচালক খুনের ঘটনায় ওড়িশার জঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত
বর্তমান | ১১ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা,বিষ্ণুপুর: পিয়ারডোবায় লিচুবাগানে খুনের ঘটনায় বিষ্ণুপুর থানার পুলিস ওড়িশায় গিয়ে মাও অধ্যুষিত জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল। ধৃতের নাম রামনারায়ন হোতা। তার বাড়ি ওড়িশার বিনিকা থানা এলাকায়। সে একজন দাগী আসামি। তার নামে ওড়িশার বিভিন্ন থানায় অন্তত ১০টি মামলা ঝুলছে। বিষ্ণুপুর থানার পিয়ারডোবায় ওড়িশার এক ট্রাক চালকের খুনের ঘটনায় তদন্তে নামে বিষ্ণুপুর থানার পুলিস। অভিযুক্তের খোঁজে চলতি মাসের ৬তারিখ পুলিসের একটি দল ওড়িশা রওনা দেয়। তিনদিন ধরে অভিযান চালিয়ে মাওবাদী অধ্যুষিত বউদ থানার অন্তর্গত সগডার জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরা হয়। এরপর ট্রানজিট রিমান্ডে মঙ্গলবার বিষ্ণুপুরে আনা হয়। এদিন বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে সাতদিনের পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। টাকা পয়সার লেনদেন সংক্রান্ত বিবাদের কারনেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিস প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৯ মার্চ বিষ্ণুপুরের পিয়ারডোবা রেলসংলগ্ন এলাকায় একটি লিচুবাগানের ভেতরে গুড্ডু রহমান নামের ২৫ বছরের এক ট্রাক চালকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়ি ওড়িশার সুবর্ণপুর জেলায়। তিনি তরমুজ বোঝাই ট্রাক নিয়ে পিয়ারডোবায় এসেছিলেন। পুলিস ময়নাতদন্ত করার পর মৃতদেহ পরিবারের লোকেদের হাতে তুলে দেয়। ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিস। পরে ওড়িশা পুলিসের কাছে পরিবারের লোকেরা গুড্ডুকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিস পিয়ারডোবায় সব্জি আড়তে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ঘটনার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভুম জেলার বাসিন্দা এক ট্রাকচালক দীপক পাণ্ডের যোগসূত্র খুঁজে পায়। চলতি বছরের ৯ মে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জেরা করে ওড়িশার ট্রাক চালক তথা দাগী আসামি রামনারায়ন হোতার খোঁজ পায়। সেই মতো বিষ্ণুপুর থানার পুলিস ওড়িশা রওনা দেয়। মোবাইলের সূত্র ধরে সগড়া এলাকায় লোকালয়ে তার খোঁজ মিললেও পরে সে জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়। এলাকাটি মাও অধ্যুষিত হওয়ায় পুলিস জঙ্গলের ভেতরে ঢুকতে সাহস পায়নি। সেজন্য প্রায় ১২ঘন্টা জঙ্গলের ধারে অপেক্ষা করে। সন্ধ্যার মুখে জঙ্গল থেকে বেরোতেই সাদা পোশাকের পুলিস তাকে পাকড়াও করে। মৃতের দাদা ওড়িশার সুবর্ণপুর জেলার বাসিন্দা মুজিবর রহমান ফোনে বলেন, আমার ভাই গুড্ডু ট্রাকের চালক ছিল। চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম দিকে আমাদের এলাকারই এক ট্রাকচালকের সঙ্গে সে পশ্চিমবাংলায় এসেছিল। কিন্তু একদিন পরেই তার মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তারপরেই বিষ্ণুপুর পুলিসের কাছ থেকে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পাই। তাকে খুন করা হয়েছে বলে আমাদের মনে সন্দেহ জাগে। সেইমতো ওড়িশার সুবর্ণপুর জেলা পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আমরা দোষীদের চরম শাস্তি চাই।