প্রথমে বুলডোজারে ধাক্কা। তার উপরে একটি দাঁতাল হাতির আক্রমণ। পর পর আঘাতের জেরে শরীরে ক্ষত তৈরি হয়েছিল জলপাইগুড়ির এক দাঁতালের। দীর্ঘদিন শরীরে ক্ষত নিয়ে সে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। গত বৃহস্পতিবার হাতিটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল বন দপ্তর। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার মৃত্যু হলো সেই দাঁতাল হাতির।
সূত্রের খবর, ওই দাঁতাল হাতি গত ফেব্রুয়ারি মাসে আপালচাঁদ রেঞ্জের জঙ্গল ছেড়ে নেপুচাপুরের কাছে আসে। সেখানে একটি কংক্রিটের ঘরে জোর ধাক্কা খায়। সে দিন একটি বুলডোজারও হাতিটিকে ধাক্কা মারে। এর জেরে দাঁতাল হাতিটির শরীরে একাধিক ক্ষত তৈরি হয়। এতদিন ধরে হাতিটি শরীরে ক্ষত নিয়েই লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হাতির চিকিৎসার দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন সোচ্চার হলেও বন দপ্তর জানায়, হাতির সন্ধান মেলেনি। তাই চিকিৎসা করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, জখম অবস্থায় হাতিটি জলপাইগুড়ির ক্রান্তি ব্লকের আপালচাঁদ রেঞ্জের বনাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল। এর পর গত মাসে একটি দাঁতাল হাতির আক্রমণে সে মারাত্মক ভাবে জখম হয়। কিন্তু এলাকার লোকজনের অভিযোগ, সেখানকার বন দপ্তর সেই সময়ে হাতিটির চিকিৎসার জন্য কিছু করেনি। এর পর গত বৃহস্পতিবার তাঁরা হাতিটির চিকিৎসা করেন। বন দপ্তরের তরফ থেকে জানানো হয়, হাতিটির শরীরে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। এর পরেই মঙ্গলবার দাঁতাল হাতিটির মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘এর আগেও ডিসেম্বর মাসে একই ভাবে বিনা চিকিৎসায় আপালচাঁদ রেঞ্জের জঙ্গলে একটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল। ফের একই ঘটনা। বন দপ্তরের আপালচাঁদ রেঞ্জের চরম গাফিলতির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি জানিয়েছেন, হাতিটির একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি কম ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় এলাকায় হাতিটি ঘুরে বেড়াত।
বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের আধিকারিক রাজা এম বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর দেহ পোড়ানো হবে৷ হাতিটিকে মারাত্মক ভাবে জখম করেছিল অন্য একটি হাতি।’