• ‘আমি সোমা বলছি’, আরজি করের ভাইরাল অডিয়ো CBI-এর নজরে
    এই সময় | ১১ জুন ২০২৫
  • এই সময়: আড়াল থেকে যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আরজি করের ঘটনা সম্পর্কে অডিয়ো ভাইরাল করেছিলেন, এ বার তাঁরাও সিবিআই–স্ক্যানারে। এদের চিহ্নিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্তে মঙ্গলবার চতুর্থ স্টেটাস রিপোর্ট শিয়ালদহ আদালতে জমা দেয় সিবিআই।

    কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রের খবর, এই মামলার তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কখনও ‘আমি সোমা বলছি’ কখনও অন্য কারও নামে একাধিক কন্ঠস্বর এবং চ্যাট সামনে আনা হয়। যদিও সোমা নামের কেউ তদন্তকারীদের সামনে হাজির হননি। এ দিন আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথি দত্ত বলেন, ‘চতুর্থ স্টেটাস রিপোর্টে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন মাধ্যমে যে সব ছবি, ভিডিয়ো সামনে এসেছিল তা সংগ্রহ করে যাচাইয়ের জন্য দিল্লির নোডাল অফিসারের মাধ্যমে একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

    বিচারক অরিজিৎ মণ্ডল জানতে চান, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ছবি–ভিডিয়ো সত্যি কি না, সেই রিপোর্ট কবে আসবে?’ সিবিআই আদালতকে জানায়, রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। বিচারক কেন্দ্রীয় সংস্থাকে পাল্টা নির্দেশ দেন, ‘রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে এই মর্মে আদালতে আবেদন করুন। আদালত সেই মতো অর্ডার করবে।’ এরপর সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সীমা পাহুজা আদালতকে বলেন, ‘এ বিষয়ে গত ৫ জুন রিমাইন্ডার দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে হাতে চলে আসবে।’ বিচারক জানান, সমাজ মাধ্যমে নানা তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। অডিয়ো– ভিডিয়োতে যাঁরা বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। একজন চিকিৎসক তাঁর কর্মক্ষেত্রে ধর্ষণ–খুন হয়েছেন, এ রকম স্পর্শকাতর বিষয় গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

    এ দিন নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য দে সওয়ালে বলেন, ‘এটা ক্রাইম এগেনস্ট নেশন বা সোসাইটি। সিবিআইয়ের চতুর্থ স্টেটাস রিপোর্টে ৩২ টিবি সিসিটিভি ফুটেজ কিংবা ৩৬ জনের বয়ান রেকর্ড ছাড়া নতুন কী তথ্য পাওয়া গিয়েছে? সঞ্জয় ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ছিল। সেই তথ্য প্রমাণ কোথায়? প্রমাণ না থাকলে কেন ৯০ দিন আটকে রাখা হলো? ‘লাস্ট সিন টুগেদার থিওরি’ অনুসারে নির্যাতিতার সঙ্গে যে চারজন শেষ সময়ে ছিলেন, তাঁদের কেন হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হলো না? শুধু সাক্ষী করে ছেড়ে দেওয়া হলো?’

    এরপর বিচারক সিবিআইয়ের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘জমা দেওয়া স্টেটাস রিপোর্ট অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ৩৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওদের স্টেটমেন্ট দেখান।’ সিবিআই আদালতে তা পেশ করে।

    এ দিন আদালতের বাইরে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘এত মাস পরে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সীমা পাহুজাকে দেখা গেল। সিবিআই তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই। যে চারজনের সঙ্গে মেয়েকে শেষবার দেখা গিয়েছিল তাঁদের কেন হেফাজতে নিল না সিবিআই? আমরা তদন্তে খুশি নই।’ নির্যাতিতার মা বলেন, ‘একজন অন ডিউটি চিকিৎসকের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলো অথচ কেউ কিছু টের পেল না? এটা হতে পারে না।’

  • Link to this news (এই সময়)