এই সময়: এসএসসি–র নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মেনে আবেদন শুরুর মুখে ‘যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’ দ্বিমুখী কৌশল নিল। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী–সহ দেশের প্রথম সারির স্বীকৃত সব রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকদের কাছে নিজেদের দুরবস্থার কথা জানিয়ে চিঠি পাঠাল মঞ্চ। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনের রায় না বেরোনো পর্যন্ত নতুন নিয়োগের জন্যে কোনও আবেদনই নেওয়া চলবে না বলে দাবি তুলেছে তারা। এই দাবিতে কাল, বৃহস্পতিবার ফের ‘এসএসসি ভবন চলো’রও ডাক দিয়েছে মঞ্চ।
দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে ‘যোগ্য’দের আবেদন, তাঁদের দুর্দশার বিষয়টি যেন সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে সব সাংসদ তুলে ধরেন। সাংসদরা নিশ্চিত করুন, যেন নিরপরাধ কেউ শাস্তি না–পান। প্রসঙ্গত, ২১ জুলাই শুরু হবে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার ঢের আগেই আগামী ১৬ জুন থেকে শুরু হতে চলেছে এসএসসি–র নতুন আবেদন–প্রক্রিয়া। চলার কথা ১৪ জুলাই পর্যন্ত। ‘যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’ অবশ্য দাবি তুলেছে, সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনের নিষ্পত্তির আগে কোনও আবেদনই গ্রহণ করা চলবে না। এ দিকে গ্রীষ্মাবকাশের পর সুপ্রিম কোর্টে রেগুলার বেঞ্চ শুরুই হবে ১৪ জুলাই থেকে।
এই অবস্থায় কাল, বৃহস্পতিবার ফের ‘এসএসসি ভবন চলো’র ডাক দিয়েছে ‘যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’। রিভিউয়ের রায়ের আগে আবেদন গ্রহণ করা চলবে না—অভিযানে এটাই মুখ্য দাবি। পাশাপাশি মঞ্চের দাবি, যে ১৫,৪০৩ জন শিক্ষক–শিক্ষিকার চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি বহাল আছে, তাঁদের সবার সার্টিফায়েড লিস্ট অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে। আদালতে রিভিউ পিটিশনে উপযুক্ত তথ্য প্রদান–সহ যোগ্যদের পুনর্বহালের ব্যবস্থা করতে হবে। যোগ্যদের জন্যে আর নতুন পরীক্ষা নয়, সব ওএমআর প্রকাশ করার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউতে রি–প্যানেল বা সংশোধিত প্যানেল তৈরির জোরালো দাবি রাখতে হবে রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে।
মঞ্চের এসএসসি অফিস চলোর ডাকে কমিশনের আধিকারিক ও সাধারণ কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, ‘ওই দিন কেউ (১৫, ৪০৩ জনের মধ্যে একজনও যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা) বাড়ি বসে থাকবেন না। সবাই একসঙ্গে রাস্তার আন্দোলনে আসুন’। এই আহ্বান শুনে এসএসসি–র অফিসার ও কর্মীরা গত ২১ ও ২২ এপ্রিলের ঘটনা স্মরণ করছেন।
তাঁদের বক্তব্য, ওই দু’দিন চাকরিহারা ‘যোগ্য’দের লাগাতার আন্দোলনে এসএসসি–র চেয়ারপার্সন ও অন্য অফিসার এবং কর্মীরা বাড়িই যেতে পারেননি। খাবার ও পানীয় জলের টানাটানিতে তাঁরা প্রবল সমস্যায় পড়েছিলেন। ১৬ জুন নতুন নিয়োগের আবেদন শুরুর মাত্র তিন দিন আগে এমন অভিযানের ডাকে কপালে চিন্তার ভাঁজ এসএসসি কর্তাদেরও। কারণ, তথাকথিত ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা কোনও মতেই আর পরীক্ষায় বসতে চাইছেন না। যা কমিশনের পাশাপাশি রাজ্যেরও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।