• সোনম, মুসকান, নিকিতা... নৃশংসতার সমার্থক! ভয়ে সিঁটিয়ে পুরুষরা, বিয়ে করতেও ভয় পাচ্ছেন?...
    আজকাল | ১১ জুন ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোথায় দাম্পত্য সুখ! বিয়ের পর আরও যেন অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। শেষমেশ চরম পরিণতি। গত কয়েক মাসে দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলেছে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় ওতোপ্রোতভাবে জড়িত বিবাহিত তরুণীরা। কেউ স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিলেন। কেউ হাসিমুখে বিয়ে করেই স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করেন। আবার কেউ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে 'পথের কাঁটা' স্বামীকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করেন। সাধারণ মানুষকে চমকে দিয়েছে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই। যা ঘিরে বর্তমানে জোর চর্চা সমাজমাধ্যমে। 

    সম্প্রতি রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ডের রহস্য ফাঁস হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল। সোনম, নিকিতা, মুসকানের ছবি শেয়ার করে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বিবাহিত পুরুষরা। বিয়ের পর এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি যে হতে পারে, তার আশঙ্কা প্রকাশ করে ব্যাচেলররা বিয়ে করতেও ভয় পাচ্ছেন বলে লিখেছেন। আবার কেউ কেউ লিখেছেন, 'মেয়েদের মধ্যে বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা। কিন্তু এর নেপথ্যে কী কারণ!' কেউ আবার লিখেছেন, 'সুখের জীবনে বিপদ বাড়াতে বিয়ে না করাই ভাল!' 

    কোন কোন কাণ্ড ঘিরে বর্তমানে তুমুল চর্চা চলছে- 

    রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ড: ১১ মে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রাজা ও সোনম রঘুবংশী। দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। কে জানত বিয়ের একমাসের মধ্যেই মর্মান্তিক পরিণতি হবে রাজার। মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে খুন হন রাজা। যে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছিলেন খোদ সোনম। বিয়ের আগে থেকেই তাঁর সম্পর্ক ছিল রাজের সঙ্গে। প্রেমিক রাজের সঙ্গে স্বামীকে খুনের ছক কষেছিলেন তিনি‌। মেঘালয়ে নির্জন এলাকায় রাজাকে নিয়ে গিয়ে, ভাড়াটে খুনিদের ডেকে খুনের নির্দেশ দেন সোনম। ২৩ মে থেকে নবদম্পতি নিখোঁজ ছিল। ২ জুন রাজার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৮ জুন গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে সোনমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

    অতুল সুভাষের মৃত্যু: গত বছর ডিসেম্বরে পেশায় ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষ ডিভোর্স খোরপোশের চাপে, স্ত্রীর দায়ের করা পরপর মামলার জেরে মানসিক চাপে আত্মঘাতী হন। তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া, তাঁর মা নিশা এবং ভাই অনুরাগকে গ্রেপতার করে পুলিশ। ২৩ পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেন অতুল। সেই সঙ্গে দেড় ঘণ্টার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে চরম অশান্তি হত। একের পর এক মামলা দেওয়া হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। যেগুলো প্রত্যেকটিই মিথ্যে। এমনকী ডিভোর্স খোরপোশের নামে কোটি কোটি টাকা দাবি করেছিলেন স্ত্রী। সেই চাপ আর সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন অতুল। 

    সৌরভ রাজপুত হত্যাকাণ্ড: ২০১৬ সালে নেভি মার্চেন্ট সৌরভ রাজপুত ও মুসকান রাস্তোগি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রেমের সম্পর্ক পরিণতি পাওয়ায় খুব খুশি ছিলেন দু'জনে। স্ত্রীর সঙ্গে আরও সময় কাটানোর জন্য মার্চেন্ট নেভির চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির কারণে এরপর বাড়ি ছেড়ে মুসকানকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন সৌরভ। ২০১৯ সালে ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন মুসকান। কিন্তু সেই সুখের মুহূর্ত বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দিন কয়েক পরেই সৌরভ জানতে পারেন, তাঁর বন্ধু সাহিলের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত মুসকান। 

    সেই সম্পর্ক ঘিরে অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। ডিভোর্সের পথে এগিয়েও, সন্তানের কথা ভেবে পিছিয়ে আসেন সৌরভ। ফের নেভির চাকরি নিয়ে ২০২৩ সালে ভিন দেশে চলে যান। মেয়ের ছ'বছরের জন্মদিন উপলক্ষে ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরেন সৌরভ। এর মাঝেই সাহিল ও মুসকান আরও গভীর প্রেমে ডুবে যান। সৌরভ দেশে ফেরার পরেই তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করেন। 

    ৪ মার্চ খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সৌরভকে খাওয়ান। অচৈতন্য অবস্থায় সৌরভকে কুপিয়ে খুন করেন মুসকান ও সাহিল। এরপর মৃতদেহ ১৫ টুকরো করে, ড্রামের মধ্যে ভরে সিমেন্ট দিয়ে আটকে দেন। কিছুদিন পর প্রতিবেশীরা সৌরভের খোঁজখবর জিজ্ঞেস করতেই, দু'জনে বলেন, তিনি পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছেন। 

    খুনের বিষয়টি লুকিয়ে রাখতে এরপর সৌরভের ফোন নিয়ে মানালিতে বেড়াতে যান সাহিল ও মুসকান। সেখানে গিয়ে সৌরভের ফোন থেকে ছবি শেয়ার করেন‌। কিন্তু সৌরভের সঙ্গে দীর্ঘদিন ফোনে কথা না হওয়ায় থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার‌। তখনই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। স্ত্রী ও বন্ধুকে জেরা শুরু করে তারা। পুলিশি জেরায় খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেন তাঁরা। খুনের ১৪ দিন পর সেই ড্রাম থেকে দেহের টুকরোগুলো উদ্ধার করা হয়। এরপরই তাঁর গ্রেপ্তার করা হয়।
  • Link to this news (আজকাল)