সুমন করাতি, হুগলি: প্রায় ১৩ কেজি ওজনের একটি পার্সেল। এলাকার একটি মঠের সামনের রাস্তার কোনায় সেটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। আর সেটি ঘিরেই ছড়ায় আতঙ্ক। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। পুলিশ শেষপর্যন্ত ওই পার্সেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চকবাজারে। ওই পার্সেলের মধ্যে ঠিক কী রয়েছে? সেই বিষয়ে পুলিশ এখনও কিছু জানায়নি বলে খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরের পর চকবাজারের ওই মঠের সামনে একটি পার্সেল পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রথমে পথচলতি মানুষজন বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। স্থানীয়রা মনে করেছিলেন, কোনও জিনিস নিয়ে যাওয়ার সময় কারও হয়তো পড়ে গিয়েছে। কিন্তু সন্ধে পেরিয়ে গেলেও কেউ সেই পার্সেল নিয়ে যায়নি। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধে। কী আছে ওই পার্সেলের ভিতর? কে বা কারা রেখে গেল ওই পার্সেল এমন জনবহুল জায়গায়? কোনও নাশকতার ছক কি করা হয়েছে? নাকি পার্সেলের ভিতর কোনও দেহাংশ আছে? নাকি নিছক মজার জন্য ওই পার্সেল রেখে যাওয়া হয়েছে? সেই প্রশ্ন উঠতে থাকে।
শেষপর্যন্ত খবর দেওয়া হয় চুঁচুড়া থানায়। রাত ১০টার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। প্রথমে পুলিশও কিছুটা দূরত্ব রেখেছিল। পরে সেই পার্সেলটি উদ্ধার করেন আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, পার্সেলটির গায়ে প্রেরক, প্রাপকের নাম লেখা থাকলেও সেগুলি অত্যন্ত অস্পষ্ট। ফলে সেটি কার জন্য কোথা থেকে এসেছে, তা পরিষ্কার নয়। পরে পুলিশ সেই পার্সেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে সেটি খোলা হবে। সেই কথাই আধিকারিকরা জানিয়েছেন। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “এই ধরনের অজ্ঞাত ও ভারী পার্সেল রাস্তায় পড়ে থাকা স্বাভাবিক নয়। তাই আমরা সবদিক খতিয়ে দেখছি।”
এলাকার বাসিন্দারা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে চারদিকে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও বিস্ফোরণের খবর শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, কে বা কারা এই পার্সেল রেখে গেল এবং এর ভিতরে কী ছিল, তা দ্রুত জনসমক্ষে আনা হোক। ঘটনার পর চকবাজার এলাকায় সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। খুব শীঘ্রই বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে চুঁচুড়া থানার কর্তৃপক্ষ। এই রহস্য দ্রুত উদঘাটন হোক, দাবি স্থানীয়দের।