সাত সকালে হুগলির একটি বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার এক মহিলা ও তাঁর মেয়ের মৃতদেহ। তাঁদের নাম পায়েল চট্টোপাধ্যায় (২৫) ও অদ্রিতা চট্টোপাধ্যায়(৪)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় (৩২)। তিনি পায়েলের স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপাড়ার ভদ্রকালী এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকালে ওই এলাকার একটি বাড়ি থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের তিনজনের দেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পরিবার সূত্রের খবর, কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে নিয়ে ওই এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। গত দু’বছর ধরে তাঁরা সেখানেই থাকছিলেন। তাঁদের বড় মেয়ে সৃজিতা চট্টোপাধ্যায় (৭) মামারবাড়িতে থাকে। কাশীনাথ একটি কারখানায় কাজ করেন। এ দিন পায়েলের বাড়িতে তাঁর মা মামনি চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন। তিনিই বুধবার সকালে ঘরে তাঁদের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
মামনি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে আমাকে জামাই ডাকতে আসে। কিন্তু আজ সকালে না আসায় আমার সন্দেহ হয়। তার পর ওদের ঘরে গিয়ে দেখি এই অবস্থা। প্রত্যেকের শরীরেই আঘাতের চিহ্ন ছিল। কাল রাতে ওদের মধ্যে কোনও ঝগড়া অশান্তি হয়নি। আমি সকালে ভাইকে খবর দিই। ভাই আসার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। কী করে এমন ঘটনা ঘটল তা এখনও বুঝে উঠতে পারছি না।’
পায়েলের মামা চন্দন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার ভাগ্নির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে দিদির কাছে থাকে আর ছোট মেয়ে ভাগ্নির কাছেই থাকে। তবে পরিবারে কী অশান্তি হয়েছে, সেটা বলতে পারব না। সকালে খবর পেয়ে এসে দেখি ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আমাদের সন্দেহ, ভাগ্নি ও নাতনি ঘরের মধ্যে ঘুমোচ্ছিল। সেই সময় জামাই নিজে ওদেরকে খুন করে।’
পুলিশের অনুমান, কাশীনাথ প্রথমে ছুরি দিয়ে নিজের মেয়ে ও স্ত্রীকে খুন করেন। এর পর নিজে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিশ। চন্দননগর কমিশনারেটের ডিসিপি অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘সকালবেলা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। তারা তিনজনকে উদ্ধার করে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’