শাস্ত্র মতে স্নানযাত্রার পরে জগন্নাথদেবের গায়ে জ্বর আসে। তাই বুধবার থেকে ১৫ দিনের জন্য গর্ভগৃহে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যাবেন তিনি। সঙ্গে বলরাম ও শুভদ্রা। রথযাত্রার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ, আগামী ২৬ জুন পুনরায় গর্ভগৃহে জগন্নাথকে দেখতে পাবেন ভক্ত এবং দর্শনার্থীরা। ওই সময় দিঘায় বেড়াতে গেলে জগন্নাথ মন্দিরে ঢোকা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে ভক্তকুল। তবে তাঁদের জন্য সুখবর দিয়েছেন জগন্নাথ মন্দিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসকনেপ সহ-সভাপতি রাধারমন দাস। তিনি বলেন, ‘‘জগন্নাথদেব অন্তরালে থাকলেও মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৩টে থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দরজা উন্মুক্ত থাকবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জগন্নাথদেবের গর্ভগৃহে কেউ প্রবেশ করতে না পারলেও ভক্তেরা মন্দিরে গিয়ে রাধামাধবের দর্শন পাবেন। সেই সঙ্গে মন্দিরের ভিতরের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, ওই সময়ে মন্দিরের ৬ নম্বর গেটের সামনে থেকে মহাপ্রসাদ (প্যাঁড়া ও খাজা) পাবেন ভক্তেরা।’’
দিঘায় রথযাত্রা অনুষ্ঠানের সুষ্ঠু আয়োজন এবং পরিচালনার জন্য বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রস্তুতি বৈঠকে করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বৈঠকে থাকবেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ডিজি রাজীব কুমার-সহ ইসকনের কর্তারা। বুধবার স্নানযাত্রা উপলক্ষে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে নিজের বাড়ির গাছের আম-কাঁঠাল পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। ওই ফল দিয়েই ভোগ নিবেদন হবে বলে জানান রাধারমণ।
এখন জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের জন্য কোনও টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। ভক্ত এবং দর্শনার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন দু’দিক দিয়েই। মূল ফটক থেকেও যেমন ভিতরে ঢোকা যাবে, তেমনই পেছন দিকের ৬ নম্বর গেট দিয়েও মন্দিরে প্রবেশ যাওয়া সম্ভব। তবে মন্দিরে প্রবেশের আগে জুতোজোড়া অবশ্যই বাইরে রেখে আসতে হবে। কেবলমাত্র ৬ নম্বর গেটের কাছেই মন্দিরের সুরক্ষাকর্মীদের নজরদারিতে জুতো রেখে ভেতরে যাওয়া যাবে।
জানা যাচ্ছে, বুধবার শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনে ১০৮ কলসি পবিত্র জল দিয়ে দেবতাদের স্নান করানো হয়েছে। পুরীর উপচার মেনে ১০৮টি তীর্থক্ষেত্র থেকে আনা বিশেষ জলে মেশানো হয়েছে গঙ্গা জল, তুলসীপাতা, কাঁচা দুধ, আতর, চন্দন এবং কর্পূর। সেই সঙ্গে জগন্নাথদেবকে ছাপান্ন ভোগ অর্পণ করা হয়েছে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে আনা আম ও কাঁঠালও রাখা হয়েছিল। মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রার মহড়া দেওয়া হয়েছে। বিশাল পুলিশি প্রহরায় ৭ নম্বর গেট দিয়ে রথ বার করে প্রায় ৫০০ মিটার পথ অতিক্রম করা হয়। আসন্ন রথযাত্রার দিন যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় তাই পরখ করে দেখে নেওয়া হয়েছে এ দিন।